ভারতের পেস আক্রমণের হৃদপিণ্ড তিনি আর সামনেই এশিয়া কাপ—তবু জাসপ্রীত বুমরাহকে হয়তো দেখা যাবে না এই বহুজাতিক টুর্নামেন্টে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে। আগামী ৯ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া কাপে অংশ নেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার মেঘ ঘনিয়েছে এই ডানহাতি গতিদানবকে ঘিরে।
সূত্র জানিয়েছে, চলতি অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফিতে ভারত-ইংল্যান্ড পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলেছেন বুমরাহ—ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কারণে। তবু এই তিন ম্যাচেই বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত—মোট ১১৯.৪ ওভার বোলিং করে ১৪ উইকেট শিকার।
তবে তার টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি অনুরাগ এবং সেই ফরম্যাটে দেশের চাহিদা বিবেচনায় রেখে বুমরাহ এশিয়া কাপ এড়িয়ে যেতে পারেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, এশিয়া কাপ শেষ হওয়ার মাত্র দুই দিন পর—অক্টোবরের ২ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ, যার ভেন্যু আহমেদাবাদ।
এক বিসিসিআই ঘনিষ্ঠ সূত্র ভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘বুমরাহ টেস্ট ক্রিকেট ভালোবাসেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে রয়েছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। তাছাড়া টি-টোয়েন্টির দিক থেকে তার সামনে জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সিরিজ রয়েছে, যেটা হতে পারে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে তার মূল প্রস্তুতি।’
সূত্র আরও বলেন, ‘যদি বুমরাহ এশিয়া কাপে খেলে এবং ভারত ফাইনাল পর্যন্ত যায়, তাহলে মাত্র দুদিনের ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট খেলা অসম্ভব হয়ে যাবে। এখন প্রশ্ন হলো—বুমরাহকে কি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে দরকার, নাকি তিনি একমাস বিশ্রাম নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুটি টেস্টে খেলবেন? এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে চিফ সিলেক্টর অজিত আগারকর এবং কোচ গৌতম গম্ভীরকে।’
এশিয়া কাপ সাধারণত বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে বিবেচিত হলেও, বুমরাহর জন্য তা হতে পারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জানুয়ারির সিরিজ। কারণ সেখানেই টার্গেট থাকবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৬।
ভারতের ক্রিকেটভক্তরা যেমন বুমরাহকে এশিয়া কাপে খেলতে দেখতে চান, তেমনি বোর্ডের সামনে আছে বাস্তব চিন্তা—ওয়ার্কলোড, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ, ওয়ার্ল্ড কাপ প্রস্তুতি সব মিলিয়ে এই পেসারের ব্যবহারে নিতে হচ্ছে সতর্ক সিদ্ধান্ত। শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় বিসিসিআই, সেটাই এখন দেখার। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট—জাসপ্রিত বুমরাহ এখন শুধু একজন বোলার নন, বরং ভারতীয় ক্রিকেটে একটি ‘সম্পদ’, যাকে নিয়ে ভাবতে হয় হিসেব করে।
মন্তব্য করুন