

বাংলাদেশের পেস বোলিং— যেটা একসময় ছিল সবচেয়ে বড় দুর্বলতা, সেটাই এখন আলোচনার কেন্দ্রে। আর সেই আলোচনায় যদি উচ্চারিত হয় জাসপ্রিত বুমরা কিংবা শাহিন শাহ আফ্রিদির নামের পাশে তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানার নাম, তাহলে গুরুত্বটা আলাদা করে বোঝানোর কিছু থাকে না। ঠিক এমন তুলনাই টেনে বাংলাদেশের তরুণ পেসারদের নিয়ে বড় আশাবাদের কথা শোনালেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার।
বিপিএলে ঢাকা ক্যাপিটালসের মেন্টর হিসেবে দায়িত্ব নিতে ঢাকায় এসে বনানীর এক হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন শোয়েব। প্রশ্নোত্তরের বড় অংশ জুড়ে ছিল বাংলাদেশের পেস আক্রমণ। সেখানে তাসকিন আহমেদকে সবার আগে সামনে এনে শোয়েব বলেন, বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের পেস বোলিং যে জায়গায় দাঁড়িয়ে, তা আন্তর্জাতিক মানের।
শোয়েবের চোখে তাসকিনের সবচেয়ে বড় শক্তি তার মানসিকতা। তার ভাষায়, তাসকিন নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছে, বোলিংয়ে তীক্ষ্ণতা আছে, মনোযোগ আছে, যা একজন ফাস্ট বোলারের জন্য সবচেয়ে জরুরি। একই সঙ্গে নাহিদ রানাকেও দেখছেন সম্ভাবনার বড় ঠিকানায়। শোয়েব মনে করেন, সঠিক প্রশিক্ষণ ও শরীরের যত্ন নিতে পারলে নাহিদ বিশ্বের সেরা ফাস্ট বোলারদের একজন হতে পারেন।
নাহিদ রানাকে উদ্দেশ করে শোয়েবের পরামর্শ ছিল স্পষ্ট— ফাস্ট বোলিং মানেই শরীরের ওপর প্রচণ্ড চাপ। সেই চাপ নিতে হলে শক্ত পেশি, উচ্চমাত্রার অনুশীলন এবং গতি ধরে রাখার মানসিকতা অপরিহার্য। শোয়েব বলেন, এসব জায়গায় উন্নতি করতে পারলে নাহিদ অনেক দূর যেতে পারবে। আর তাসকিনের মধ্যে এই গুণগুলো তিনি ইতোমধ্যেই দেখতে পাচ্ছেন।
তাসকিনকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা পেসারদের কাতারে দেখেন কি না— এমন প্রশ্নে শোয়েবের উত্তর ছিল আরও তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি সরাসরি বলেন, বুমরা, শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহদের কাতারেই তাসকিন ও নাহিদকে দেখছেন তিনি। পাকিস্তানের সাবেক এই গতিদানবের এমন মন্তব্য বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের অগ্রগতিরই প্রতিচ্ছবি।
বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়েও আশাবাদী শোয়েব। তার মতে, এই পেস ব্যাটারি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে শক্তিশালী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ বড় কিছু করে দেখানোর সক্ষমতা রাখে, যদি নিজেদের ওপর বিশ্বাসটা ধরে রাখতে পারে।
শুধু বোলার নয়, ব্যাটিং লাইনআপেও শোয়েবের নজর আছে। লিটন দাসের ব্যাটিং তাকে মুগ্ধ করেছে বলে জানান তিনি। পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স তিনি কাছ থেকে দেখেছেন এবং মনে করেন, এই দলটির ভেতরে ‘ম্যাজিক’ দেখানোর সামর্থ্য আছে।
বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ শন টেইটের প্রশংসাও করেছেন শোয়েব। তার মতে, টেইট এই দায়িত্বের জন্য আদর্শ মানুষ। ভবিষ্যতে নিজে কোচিংয়ে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নাকচ না করলেও শোয়েব পরিষ্কার করে দেন— এই মুহূর্তে শন টেইটের অধীনেই বাংলাদেশের পেসারদের কাজ চালিয়ে যাওয়া সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।
মন্তব্য করুন