বাংলাদেশ ফুটবলে নতুন আবহ তৈরি করেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা ফুটবলার হামজা চৌধুরির আগমন। তার আগমনে সাধারণ দর্শকদের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমেও দেখা গেছে ব্যাপক আগ্রহ। আগামীকাল ভুটানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচকে ঘিরে আজ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেই আগ্রহ যেন উপচে পড়লো।
বিকেলে রাজধানীর বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এত বেশি সংখ্যক সাংবাদিক উপস্থিত হন যে, কক্ষের চেয়ার সংখ্যাই হয়ে পড়ে অপ্রতুল। ফলে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন সংবাদকর্মীকে বাধ্য হয়ে মেঝেতে বসে কভার করতে হয় পুরো অনুষ্ঠান। অনেকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেছেনও।
ভুটান দলের কোচ ও ম্যানেজারের পর মাইক্রোফোনের সামনে আসেন বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা এবং অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। সম্মেলন কক্ষে ঢুকেই সাংবাদিকদের এমন অবস্থা দেখে থমকে যান জামাল। নিজের মোবাইলে সে দৃশ্য ধারণ করে রেখে দেন, যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে মনে রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে জামাল বলেন,
'আজ এত সাংবাদিক দেখে ভালো লাগছে। কিন্তু নিচে বসে আপনাদের কষ্ট করতে দেখে খারাপও লাগছে। আমার মনে হয়, বাফুফের আরও চেয়ার কেনা উচিৎ।'
জামালের এই মন্তব্য ফুটবলপ্রীতি যেমন প্রকাশ করে, তেমনি বাফুফের মিডিয়া ব্যবস্থাপনার দিকেও এক ধরনের প্রতিবাদী ইঙ্গিত।
দুঃখজনক হলেও সত্য, এটি প্রথমবার নয়। দীর্ঘদিন ধরেই সংবাদকর্মীরা বাফুফের সংবাদ সম্মেলন ও অনুশীলন কাভার করতে গিয়ে নানা রকম অব্যবস্থাপনার শিকার হয়ে থাকেন। এবারও জাতীয় দলের অনুশীলনে ঢোকার সময় মিডিয়া কর্মীদের সঙ্গে স্টেডিয়ামের নিরাপত্তাকর্মীদের ধাক্কাধাক্কি ও কথাকাটাকাটি হয়। পরে অবশ্য সবাই প্রবেশের অনুমতি পান।
ফুটবল সংশ্লিষ্টদের মতে, এমন আন্তর্জাতিক মানের আয়োজন, বিশ্বমঞ্চে খেলা খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ এবং এত বড় মিডিয়া কভারেজ—সবই ফুটবলের প্রতি দেশের আগ্রহ বাড়ার ইঙ্গিত। কিন্তু এসব আয়োজনের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও মিডিয়া ব্যবস্থাপনায় যদি উন্নয়ন না হয়, তাহলে তা গোটা চিত্রকেই ম্লান করে দিতে পারে।
জামাল ভূঁইয়ার কষ্টবোধ ব্যক্ত করা শুধু এক জন অধিনায়কের মানবিকতা নয়, বরং ফুটবলের উন্নয়ন কাঠামোয় দায়বদ্ধতার দিকেও এক শক্ত বার্তা।
মন্তব্য করুন