কার্লো আনচেলত্তির ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ হিসেবে প্রথম ম্যাচ। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের মঞ্চে ইকুয়েডরের মাঠে শুরুটা স্বপ্নময় না হলেও, ইতালিয়ান কোচ তার শিষ্যদের পারফরম্যান্সে খুশি। গুয়াকুইলের মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে ২০২৬ বিশ্বকাপ দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে ব্রাজিল গোলশূন্য ড্র করেছে ইকুয়েডরের বিপক্ষে। তবে এই ফলাফলেও অনেক কিছু দেখেছেন আনচেলত্তি।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি বলেন, ‘রক্ষণে আমরা চমৎকার খেলেছি। বল পজিশনেও দল ভালো করেছে, গেমটা ছিল কিছুটা বেশি তরল। এটা একেবারে পারফেক্ট ম্যাচ না হলেও, একটি গুরুত্বপূর্ণ ড্র। আমরা সন্তুষ্ট, আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফিরছি।’
এই ড্রয়ের পর ১৫ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে ব্রাজিল টেবিলের চতুর্থ স্থানে আছে। তবে প্যারাগুয়ে বৃহস্পতিবার উরুগুয়েকে হারিয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে উঠে এসেছে তৃতীয় স্থানে। ফলে পয়েন্ট টেবিলে নীচে নেমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে ব্রাজিলের।
পরবর্তী ম্যাচ ১১ জুন, মঙ্গলবার রাত ৯:৪৫-এ (বাংলাদেশ সময় বুধবার ভোর ৬টা ৪৫) সাও পাওলোর নিওকেমিকা এরেনায় প্যারাগুয়ের বিপক্ষে। ম্যাচটিকে সামনে রেখে সাও পাওলো ফিরে শুক্রবার বিশ্রামে থাকবে দল। শনিবার করিন্থিয়ানসের জোয়াকিম গ্রাভা ট্রেনিং সেন্টারে আবারও অনুশীলনে ফিরবে তারা।
মাঠের পারফরম্যান্স নিয়ে আনচেলত্তি বলেন, ‘ভিনিসিয়ুস ও কাসেমিরো দ্বিতীয়ার্ধে ভালো সুযোগ পেয়েছিল। আক্রমণে আরও ভালো হতে পারতাম, তবে ইকুয়েডরও ভালো খেলেছে। আমরা পরিষ্কার বল ডেলিভারি করতে পারছিলাম না, বিশেষ করে শেষ তৃতীয়াংশে। মাঠের কন্ডিশনও খুব একটা সহায়ক ছিল না।’
রিচার্লিসন ও গারসনের পরিবর্তনের বিষয়ে আনচেলত্তির ব্যাখ্যা, ‘তাদের মাধ্যমে দলকে নতুন শক্তি দিতে চেয়েছিলাম। রিচার্লিসন রক্ষণে দুর্দান্ত পরিশ্রম করেছে। মাতেউস ও রিচার্লিসন আলাদা ধাঁচের খেলোয়াড়—একজন বলের পজিশনে কাজ করে, আরেকজন গভীরতায় খেলে।’
‘আমি ১৮০০-এর বেশি ম্যাচে বেঞ্চে থেকেছি, কিন্তু এটি ছিল বিশেষ। জাতীয় দলের হয়ে কাজ করা সম্মানের, এটা আমার কাছে উপহারস্বরূপ।’
আনচেলত্তির স্পষ্ট বার্তা, ‘আমাদের লক্ষ্য বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা এবং ব্রাজিলকে আবারও শীর্ষস্থানে নিয়ে যাওয়া। আমাদের হাতে মানসম্পন্ন খেলোয়াড় আছে। কাজের সময় কম, তবে মানের ঘাটতি নেই। আজ রাফিনিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিল না, কিন্তু সামনে আমরা আরও ভালো করব।’
আনচেলত্তি জানিয়েছেন, মারকিনিয়োস অধিনায়ক থাকবেন। পাশাপাশি তরুণদের প্রসংশা করে বলেন, ‘অ্যালেক্স ভালো খেলেছে, বাকিরাও চমৎকার সাপোর্ট দিয়েছে।’
ইউরোপ-দক্ষিণ আমেরিকার পার্থক্য নিয়ে আনচেলত্তির মন্তব্য, ‘ফুটবল সব জায়গাতেই এক, তবে জাতীয় দলের হয়ে খেলার অনুভূতি আলাদা। পেছনে গোটা দেশ থাকে, আর সেই দায়িত্বেই আমরা সেরা পারফরম্যান্স দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচেই বোঝা যাবে, আনচেলত্তির এই ‘পুনর্গঠনের যাত্রা’ কতটা সফল হচ্ছে। তবে শুরুটা রক্ষণভাগে নিরাপত্তা দিয়ে হলেও, ব্রাজিলের ফুটবল দর্শকরা জানে—আসল মায়া তো আক্রমণেই!
মন্তব্য করুন