ঈদের আমেজ এখনো পুরোপুরি কাটেনি। এর মধ্যেই ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে দেখা গেল ভিন্ন এক ম্যাচের রোমাঞ্চ। মাঠে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে গঠিত ‘টিম অ্যাডভাইজারস’ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের দল ‘টিম ডিপ্লোম্যাটস’। এই প্রীতি ম্যাচে ১-০ গোলের জয় তুলে নেয় উপদেষ্টাদের দল।
টিম অ্যাডভাইজারসের হয়ে মাঠে নামেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, আইন উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল। অপরদিকে, ডিপ্লোম্যাটদের দলে খেলেছেন স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিস্টিয়াগা, পাশাপাশি ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্কের বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তারাও অংশ নেন।
প্রীতি ম্যাচটি ছিল দুই অর্ধে বিশ মিনিট করে। ম্যাচের ২২তম মিনিটে এক আত্মঘাতী গোলের সুবাদে এগিয়ে যায় টিম অ্যাডভাইজারস। আর সেটিই শেষ পর্যন্ত নির্ধারণ করে জয়-পরাজয়।
এই ব্যতিক্রমধর্মী ম্যাচের আয়োজনে নেতৃত্ব দিয়েছেন ক্রীড়া ও আইন উপদেষ্টারা। আসিফ মাহমুদ সজীব বলেন, ‘১০ জুন সিঙ্গাপুর ম্যাচ দেখতে এসে অনেক রাষ্ট্রদূত এমন একটি ম্যাচ আয়োজনের আগ্রহ দেখান। এরপর আসিফ নজরুল স্যার উদ্যোগ নেন, যার ভিত্তিতে আজকের এই আয়োজন সম্ভব হয়েছে।’
মজার ছলে টিমের নামকরণ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা প্রথমে ভাবছিলাম ‘টিম বাংলাদেশ’ নাম রাখবো, কিন্তু ভাবলাম দেশের নাম ডুবাতে চাই না! তাই ‘টিম অ্যাডভাইজারস’ রেখেছি। প্রতিপক্ষ দলে ২৩-২৪ বছর বয়সী আমেরিকান খেলোয়াড়ও ছিল। আমাদের আসিফ ভাই দুর্বল গড়ন নিয়ে শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলেছেন। চেষ্টা করেছি যেন দল হার না মানে।’
খেলার বাইরেও ফুটবল নিয়ে গভীর আগ্রহী আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি বহু বছর ধরে জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলা দেখি। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল খুব অল্প সময়েই অনেক কিছু করে দেখিয়েছেন। ১০ জুনের ম্যাচে আমি দেখেছি—বাংলাদেশ শুধু বল ধরে খেলেছে না, ‘অফ দ্য বল’ মুভমেন্টও ছিল, যা আগের ফুটবলে ছিল না।’
বাংলাদেশে ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ফুটবল আমাদের হৃদয়ের স্পন্দন। একসময় অন্য খেলার আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ফুটবলকে প্রায় গলা টিপে মারা হয়েছিল। তবে এখন আবার ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। আমি আশাবাদী, আসিফ এবং তাবিথের নেতৃত্বে এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
প্রীতি ম্যাচ হলেও এর প্রতিটি মুহূর্ত ছিল প্রাণবন্ত। মাঠের হাসি-ঠাট্টা, প্রতিযোগিতা আর সৌহার্দ্যের এ আয়োজন ফুটবলপ্রেমীদের জন্য যেমন অনুপ্রেরণাদায়ক, তেমনি কূটনৈতিক সম্পর্কেও নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
মন্তব্য করুন