

আঙ্গোলার রাজধানী লুয়ান্ডার ১১ দে নভেমব্রে স্টেডিয়ামে যেন উৎসবের আমেজ। কারণ—মাঠে নামছেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনার এই বিরল প্রীতি ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে, আর সেই ম্যাচেই গোল ও অ্যাসিস্টে ছাপ রাখলেন অধিনায়ক। একই সঙ্গে তিনি ক্যারিয়ারের ৯০০ গোলের আরও কাছে পৌঁছালেন (এখন তার গোলসংখ্যা ৮৯৫)।
আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) এই প্রীতি ম্যাচ থেকে আয় করেছে প্রায় সাত মিলিয়ন ডলার—যা সাধারণ প্রীতি ম্যাচের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। প্রতিপক্ষের পরিচয় এবং ম্যাচের আনুষ্ঠানিকতার কারণে এটিকে স্বাভাবিক প্রীতি ম্যাচ বলা কঠিন।
ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ শুরু থেকেই ছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হাতে। মেসির নিখুঁত পাস থেকে ১–০ করেন লাউতারো মার্টিনেজ—যিনি এদিন মাঠে নেমেছিলেন হুলিয়ান আলভারেজের জায়গায়। এই গোলে জাতীয় দলে লাউতারোর গোলসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬—এপারে হারনান ক্রেসপোকে (৩৫) ছাড়িয়ে গেলেন। সামনে এখন সার্জিও আগুয়েরো (৪২)।
শেষ দিকে নিজের নামও স্কোরশিটে তুলে নেন মেসি। ৮৫ মিনিটে গোল করে ম্যাচটিকে নিজের মতো সাজিয়ে নেন। এরপরই তাঁকে বদলি করা হয় এবং আর্জেন্টিনার নতুন কয়েকজন ফুটবলারের অভিষেক হয়—জোয়াকিন পানিচেলি, জিয়ানলুকা প্রেসতিয়ান্নি, কেভিন ম্যাক অ্যালিস্টার ও ম্যাক্সিমো পেরোনে।
ম্যাচের আগে অনুষ্ঠিত হয় কিছু রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠানিকতা, যা সাধারণত জাতীয় দলের ম্যাচে দেখা যায় না। আঙ্গোলার প্রেসিডেন্ট জোয়াও লরেঁসো ও তাঁর স্ত্রী মেসি ও আঙ্গোলা অধিনায়ক ফ্রেডিকে দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে বিশেষ স্মারক প্রদান করেন। রাজনৈতিক ইভেন্টে অংশ নিতে মেসি বেশি আগ্রহী নন—তবু দেশের শুভেচ্ছা রক্ষায় তা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল না।
ম্যাচটিতে আর্জেন্টিনা প্রত্যাশিতভাবেই আধিপত্য দেখালেও খুব আক্রমণাত্মক ছিল না। আঙ্গোলা কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এমিলিয়ানো রুলির গোল পোস্টে তেমন পরীক্ষা দিতে পারেনি।
মেসির গোল–অ্যাসিস্টে আলোকিত এই অদ্ভুত প্রীতি ম্যাচ আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়া ছাড়াও ছিল ইতিহাসের অংশ—একদিকে আঙ্গোলার স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি, অন্যদিকে বিশ্বসেরার আরেকটি অধ্যায়ের ছাপ। ক্যারিয়ারের ৯০০ গোল ছোঁয়া এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
মন্তব্য করুন