যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ফুটবলারদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিপক্ষ দলের চেয়ে যেন আবহাওয়া! তীব্র গরম ও আর্দ্রতায় হাঁসফাঁস করছেন খেলোয়াড় ও কোচেরা। কেউ বলছেন, এমন গরমে খেলা ‘অসম্ভব’, আবার কেউ বলছেন, ‘থামতেও কষ্ট, দৌড়াতেও কষ্ট।’
তেমনি একজন ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটির ডাচ মিডফিল্ডার তিজজানি রেইয়েন্ডার্স। তিনি জানিয়েছেন, খেলোয়াড়রা প্রচণ্ড গরম নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও তারা ম্যাচের জন্য প্রস্তুত। আগামী বুধবার ফিলাডেলফিয়ায় মরক্কোর উইদাদ এসির বিপক্ষে মাঠে নামবে সিটি, যেখানে স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় ম্যাচ শুরু হবে এবং তাপমাত্রা ৮৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এর আগে সিটি ফ্লোরিডার বোকা রেটনে তীব্র গরমে অনুশীলন করেছে, যেখানে তাপমাত্রা ছিল ৯০ ফারেনহাইটের বেশি। রেইয়েন্ডার্স বলেন, ‘আমরা গরমের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছি। ম্যাচটি নিয়ে আমরা সিরিয়াস, যেমন প্রতিটি টুর্নামেন্টেই থাকি।’
তবে শুধু সিটিই নয়, পিএসজিও গরমের প্রকটতা টের পেয়েছে। গত রোববার পাসাডেনায় অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ৪-০ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। ম্যাচ শেষে অ্যাথলেটিকোর মিডফিল্ডার মার্কোস লরেন্তে বলেন, ‘এটা একেবারেই অসম্ভব। আমার পায়ের আঙুল ব্যথা করছিল, নখে চাপ পড়ছিল। থামাও কঠিন, দৌড়ানোও কঠিন।’
পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে বলেন, ‘তাপমাত্রার কারণে ম্যাচের গতি ও মান স্পষ্টভাবেই প্রভাবিত হয়েছে। সময়টা ইউরোপের দর্শকদের জন্য ভালো হলেও খেলোয়াড়দের জন্য মোটেই না।’
রিয়াল মাদ্রিদও ফ্লোরিডায় নিজেদের অনুশীলন শুরু করেছে। কোচ জাবি আলোনসোকে দেখা গেছে স্প্রিংকলারে হাত ভিজিয়ে ও বরফ ব্যবহার করে গরম সামলাতে।
উল্লেখ্য, ফিফা ২০১৪ সাল থেকেই গরমের মধ্যে ম্যাচ হলে ‘কুলিং ব্রেক’ চালু রেখেছে। যেখানে গরম ও আর্দ্রতার গড় তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৮৯.৬ ফারেনহাইট) ছাড়ালেই প্রতি অর্ধে একবার করে পানি পানের সুযোগ দেওয়া হয়।
তবুও প্রশ্ন উঠছে—এই গরমে ফুটবলারদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কি সত্যিই কমছে? গত বছরের কোপা আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রে দু’টি হিট-স্ট্রোকের ঘটনা ঘটেছিল। এবার ক্লাব বিশ্বকাপে সেই ভয় যেন আরও স্পষ্ট। মাঠে ১১ বনাম ১১ নয়, যেন এবার খেলাটা ১১ বনাম দাবদাহ!
মন্তব্য করুন