

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফ্রাঙ্কফুর্টের মাঠে ৫-১ ব্যবধানে জয়ের পর লিভারপুল শিবিরে আশা জেগেছিল—হয়তো এবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তারা। কিন্তু সেই আশার আলো টিকল না তিন দিনও। শনিবার রাতে ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগে ৩-২ ব্যবধানে হারল আর্নে স্লটের দল, আর তাতেই ধরা পড়ল মৌসুমজুড়ে তাদের পুরোনো রোগ—রক্ষণভাগের ভঙ্গুরতা, তাল হারানো আত্মবিশ্বাস আর মানসিক দুর্বলতা।
ম্যাচের শুরু থেকেই যেন গলদ ছিল লিভারপুলের ছন্দে। মাত্র পাঁচ মিনিটেই মাইকেল কায়োদের লং থ্রো থেকে ড্যাংগো উয়াতারার গোল, যা একেবারে উন্মোচন করে দেয় অতিথি দলের ডিফেন্স লাইনকে। সেখান থেকেই শুরু ব্রেন্টফোর্ডের দাপট।
প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে মিকেল ড্যামসগার্ডের অসাধারণ থ্রু বল পেয়ে কেভিন শ্যাডে গোল করলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। সেইসঙ্গে স্টেডিয়ামের গ্যালারিজুড়ে ‘বি’ সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে কেঁপে ওঠে বাতাস।
অবশ্য বিরতির ঠিক আগমুহূর্তে মিলোস কেরকেজের শটে এক গোল শোধ করে লিভারপুল, তাতেই খানিক আশার আলো জ্বলে ওঠে। কিন্তু বিরতির পর সেই আলো দ্রুত নিভে যায়। ৬০ মিনিটে ভার্জিল ফন ডাইক পেনাল্টি বক্সের লাইনে উয়াতারাকে ফাউল করলে ভিএআর হস্তক্ষেপে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত আসে। সেখান থেকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ইগর তিয়াগো নিখুঁত শটে গোল করে লিভারপুলের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন।
শেষ দিকে মোহামেদ সালাহর দারুণ এক গোল ব্যবধান কমালেও তাতে আর কিছুই বদলায়নি। চতুর্থ টানা লিগ পরাজয়ে মর্যাদাহানির মধ্য দিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।
এদিন স্লটের কৌশল নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিজ্ঞ অ্যান্ড্রু রবার্টসনের বদলে কেরকেজকে মাঠে নামানো তার সিদ্ধান্ত বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিডফিল্ডে ১১৬ মিলিয়ন পাউন্ডের জার্মান তারকা ফ্লোরিয়ান ভার্টজ ছিলেন পুরোপুরি নিস্তেজ, আর ফন ডাইকও ছিলেন ছন্নছাড়া।
এই হারের পর ১০ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে নেমে গেছে লিভারপুল, চার পয়েন্টে পিছিয়ে গেছে শীর্ষে থাকা আর্সেনালের চেয়ে। অন্যদিকে চতুর্থ জয় তুলে নিয়ে দশম স্থানে উঠে এসেছে আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর ব্রেন্টফোর্ড।
লিভারপুল এখন শুধু পরিসংখ্যানে নয়, আত্মবিশ্বাসেও পিছিয়ে পড়ছে। স্লটের সামনে এখন প্রশ্ন একটাই— ভুলের দায় তিনি কবে নিজের কাঁধে তুলে নেবেন?
মন্তব্য করুন