লিসবনের এস্তাদিও দে লুইজ স্টেডিয়ামের নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেদ করে হুট করেই ঢুকে পড়েন এক দর্শক। পর্তুগালের পতাকা হাতে দৌড়ে যান ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর কাছে। মাথাটা একদম রোনালদোর দুই পায়ের মাঝে মাটিতে রেখে গভীর ভালোবাসার কুর্নিশ করেন; তাতেও মন ভরেনি তার। এরপর রোনালদোকে কোলে করে উঁচিয়ে ধরেন সে ভক্ত!
খেলার মাঠে এ সব অভিজ্ঞতা কম নয় সিআরসেভেনের। তাই ভক্তের এমন কাণ্ডে দাঁড়িয়ে হাসছিলেন পর্তুগাল কিংবদন্তি। এতটুকু বাধাও দেননি, বরং ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে হাসছিলেন রোনালদো। ততক্ষণে মাঠে ছুটে এসেছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। পর্তুগিজ তারকার বিখ্যাত সিউ গোল উদযাপন সেরে ভোঁ-দৌড় দেন সেই ভক্ত; যেন বিশ্বজয় করেছেন! স্টেডিয়াম জুড়ে তখন কেবলই করতালির আওয়াজ।
২০২৪ ইউরো বাছাইপর্বে বসনিয়াকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে পর্তুগাল। তিন ম্যাচের সব কটি জিতে ‘জি’ গ্রুপের শীর্ষে পর্তুগিজরা। ম্যাচে শুরু থেকে খেলেছেন আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলের মালিক রোনালদো। তবে তিনি কোনো গোল করতে পারেননি। ব্রুনো ফার্নান্দেজের জোড়া ও বের্নার্দো সিলভার গোলে ৩-০ ব্যবধানের জয় পায় পর্তুগাল।
গোল না পেলেও ভক্তদের ভালোবাসা ঠিকই পেয়েছেন সিআরসেভেন। ম্যাচ শেষে ঘটেছে আরেকটি মজার ঘটনা। কৌতুক করার দক্ষতায় ভীষণ জনপ্রিয় ইউটিবার স্পিডের আসল নাম ড্যারেন ওয়াটকিনস জুনিয়র। তিনিও রোনালদোর পাগলভক্ত। সিআরসেভেন যখন স্টেডিয়াম থেকে বের হচ্ছিলেন, তখন স্পিড থেকে গাড়ি থেকে নেমে আসেন।
স্বপ্ন পূরণে তখন পাগলপ্রায় স্পিড। চোখ আর মুখে ভরপুর আবেগ নিয়ে শিশুর মতো লাফাতে থাকেন তিনি। রোনালদো একটু কাছে আসতেই হাঁটু ভাঁজ করে বসে পড়েন স্পিড। এরপর কান্নামিশ্রিত কণ্ঠে কিছু একটা বলেই জড়িয়ে ধরেন রোনালদোকে। পর্তুগিজ তারকাও উষ্ণ আলিঙ্গন করেন স্পিডকে।
রোনালদো চলে যাওয়ার পর নিজের আবেগ আর ধরে রাখতে পারেননি স্পিড। বসে পড়ে ‘ও মাই গড’ বলতে বলতে শিশুর মতো কাঁদতে থাকেন তিনি। এই বিলাপ শোকের নয়; আনন্দের, ভালোবাসার।
৩৮ বছর বয়সেও খেলে যাচ্ছেন রোনালদো। এর অন্যতম কারণ হয়তো ভক্তদের এই ভালোসা। আর এমন বিশুদ্ধ ভালোবাসা পাওয়ার লোভ তো সবারই থাকে।
মন্তব্য করুন