

লিভারপুল ও পর্তুগালের ফরোয়ার্ড দিয়োগো জোতার মৃত্যুর পর পুরো ফুটবল বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া নেমেছিল। জুলাই মাসে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় জোতা ও তার ভাই আন্দ্রে সিলভা প্রাণ হারান। তাদের শেষ বিদায়ে যোগ দিয়েছিলেন ক্লাব ও জাতীয় দলের বহু সতীর্থ। তবে অনুপস্থিত ছিলেন দলের সবচেয়ে বড় তারকা, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
সেই অনুপস্থিতি নিয়ে যখন নানা প্রশ্ন ও সমালোচনা উঠছিল, তখন অবশেষে মুখ খুললেন রোনালদো। পিয়ার্স মরগানের সঙ্গে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে আল নাসরের পর্তুগিজ তারকা জানালেন, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই যাননি—কারণ, তার উপস্থিতি ‘একটি সংবেদনশীল মুহূর্তকে সার্কাসে’ পরিণত করতে পারত।
রোনালদোর ভাষায়, ‘দুইটা কারণ আছে। মানুষ আমাকে নিয়ে অনেক সমালোচনা করে, কিন্তু আমি তা নিয়ে চিন্তা করি না। যখন আপনার বিবেক পরিষ্কার থাকে, তখন কারও কথায় কিছু যায় আসে না। আমার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে আমি আর কখনো কোনো কবরস্থানে যাইনি। আর আমি জানি, আমি কোথাও গেলে সেটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে যায়। আমি সেই দৃষ্টি আকর্ষণ চাই না।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এমন সময়ে আমি চাই না কেউ ক্যামেরা নিয়ে আসুক, সাক্ষাৎকার নিক, বা ফুটবল নিয়ে কথা বলুক। আমি এই ‘সার্কাস’-এর অংশ নই। অন্যরা যদি হতে চায়, শুভকামনা রইল, কিন্তু আমি অন্য পথে হাঁটব। মানুষ চাইলে আমাকে সমালোচনা করুক, আমার সিদ্ধান্তে আমি শান্ত।’
দিয়োগো জোতার শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন লিভারপুল অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক, কোচ আর্নে স্লট, অ্যান্ডি রবার্টসনসহ দলের অন্য সদস্যরা। সাবেক সতীর্থ জর্ডান হেন্ডারসন ও জেমস মিলনারও শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দেশে ফিরেছিলেন।
পর্তুগাল দলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ব্রুনো ফার্নান্দেজসহ আরও কয়েকজন জাতীয় দলের খেলোয়াড়। জোতা জাতীয় দলের হয়ে ৪৯ ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, জিতেছেন দুটি নেশনস লিগ শিরোপা। ক্লাব পর্যায়ে লিভারপুলের জার্সিতে প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ ও লিগ কাপ জয়ও ছিল তার সাফল্যের তালিকায়।
রোনালদোর অনুপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক যতই থাকুক না কেন, তার ব্যাখ্যা যেন স্পষ্ট—কখনো কখনো নীরবতাই সবচেয়ে বড় শ্রদ্ধা।
মন্তব্য করুন