

জাতীয় দলের জার্সিতে চার ম্যাচ খেলেও এখনো জয়ের স্বাদ পাননি সামিত সোম। মাঠে সবার চেয়ে বেশি দৌড়ানো, লড়াই করা—সবই করছেন, তবু শেষ মুহূর্তের ভুল আর দুর্ভাগ্যে প্রতিবারই হাতছাড়া হয়েছে জয়। তাই লাল-সবুজের জার্সি পরে প্রথমবার জেতার আকাঙ্ক্ষা এখন তার কাছে যেন এক ব্যক্তিগত লড়াইয়ের নাম। জাতীয় স্টেডিয়ামে শনিবার বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সামিত সেই তীব্র আকুলতাই প্রকাশ করলেন বারবার।
দেশের ফুটবলপ্রেমীদের হতাশার কথাও জানেন। তবে সবচেয়ে বেশি ব্যথা যে খেলোয়াড়দের—সেটা স্পষ্ট করে দিয়ে সামিত বললেন, ‘আসল ব্যাপার হলো জয়। বাংলাদেশে আসার পর এখনো জিতিনি। আমরা সবাই সেই ম্যাচটার অপেক্ষায়, যেটা জিতে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে পারবো।’
১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে অভিষেকের পর হংকংয়ের বিরুদ্ধে হোম-অ্যাওয়ে লড়াই এবং সবশেষে নেপালের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ—সব ক’টিতেই বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দুই ম্যাচে শেষ মিনিটে গোল খেয়ে হার, দুই ম্যাচ ড্র।
অভিজ্ঞতার সেই তিক্ততা নিয়ে সামিতের স্বীকারোক্তি—‘শেষ মিনিটে গোল খেয়ে আমরা ভুগেছি। আপনাদের কষ্ট লেগেছে—আমাদের কষ্ট আরও বেশি। আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি কীভাবে এই পরিস্থিতি এড়ানো যায়।’
তিনি আরও মনে করিয়ে দিলেন, কিছু পরিস্থিতি একেবারেই দুর্ভাগ্যজনক, ‘নেপালের কর্নারটা হয়তো অফসাইডও হতে পারত। ভাগ্য আমাদের দিকে নেই এখন। কিন্তু মনোযোগ ধরে রাখতে হবে শেষ বাঁশি পর্যন্ত।’
দীর্ঘ ফ্লাইট, আবহাওয়ার ধকল—সবই সামলান সামিত। তবু প্রথম জয় উদযাপনের স্বপ্ন তাকে ভীষণ উদ্দীপ্ত করে। ‘আশা করি মঙ্গলবারই সেটা হবে। বাংলাদেশে আসতে, লড়াই করতে, সতীর্থদের সঙ্গে খেলতে আমার খুবই ভালো লাগে। আর জয়ের পর উদযাপন? পুরোপুরি থাকবে।’
হামজা চৌধুরী ও সামিত—দুজনই আন্তর্জাতিক মানের ফুটবলার। কিন্তু দলের অন্যদের মান নিয়ে প্রশ্ন আসে প্রায়ই। রক্ষণ ও গোলরক্ষকের ভুলে পয়েন্ট হারানোর ঘটনাও কম নয়। তবে সতীর্থদের পাশে দাঁড়িয়ে সামিত বললেন—
‘এটা বিদেশি বনাম দেশি নয়। আমরা এগারো জন। সবাইকে একসঙ্গে থাকতে হবে। অভিজ্ঞতা থেকে শেখাই আসল।’
তার মতে, দলের পাসিং, কন্ট্রোল ও টিম স্পিরিট আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে।
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড হতাশাজনক—২২ বছর ধরে জয় নেই। কিন্তু সামিত বাস্তববাদী ও আশাবাদী।
‘ভারত ভালো দল, কিন্তু ফাঁকফোকড় আছে। মিডফিল্ড-ডিফেন্সের মাঝে জায়গা পাওয়া যায়। আমরা এখন যেমন পাসিং করছি, ওই জায়গা কাজে লাগাতে পারবো।’
সমালোচনার কেন্দ্রে থাকা স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার পক্ষে দাঁড়ালেন সামিত সোম।
‘কোচের পরিকল্পনা ঠিক আছে। গোল খাচ্ছি আমাদের ভুলের জন্য। আমরা কোচকে বিশ্বাস করি।’
মন্তব্য করুন