

এল ক্লাসিকো মানেই উত্তেজনা, কিন্তু মন্টজুইকের রাতটি পেল একতরফা রূপ—যেখানে নীল-লালদের গর্জনে হারিয়ে গেল রিয়াল মাদ্রিদের প্রতিরোধ। অলিম্পিক স্টেডিয়ামের ৩৬ হাজারের বেশি দর্শক সামনে বার্সেলোনা নারী দল ৪–০ গোলের জয়ে শুধু প্রতিশোধই নিল না, লিগ তালিকায় রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধানও বাড়াল সাত পয়েন্টে।
ইতিহাসের ২০তম নারী ক্লাসিকো শুরু থেকেই ছিল হাই-ভোল্টেজ। প্রথম ১০ মিনিটেই দু’দলের দুই শট পোস্টে লাগে, দু’টি গোল অফসাইডে বাতিল হয়। মাত্র ৩৩ সেকেন্ডে আলেক্সিয়ার হেডার পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়; পাল্টা আক্রমণে ফেলারের শটও একই পরিণতি পায়।
১৫ মিনিটে কলোদিয়া পিনার পাস থেকে ইভা পায়োর নিখুঁত টাচে বার্সেলোনা এগিয়ে যায়। কয়েক মিনিট পর আরেকটি গোল করলেও দীর্ঘ ভিএআর পর্যালোচনায় হাতছোঁয়ার আগের এক স্পর্শে হ্যান্ডবল ধরা পড়ে, বাতিল হয় পোলিশ ফরোয়ার্ডের গোলটি।
এরপর রিয়ালের সান্দ্রা কাইসেডো দুর্দান্ত একটি সুযোগ তৈরি করলেও ওয়ান-অন-ওয়ানে তাকে থামান গোলরক্ষক কাটা। ফুটবলের পুরনো প্রবাদ—"মিস করলে শাস্তি হবেই"—হুবহু সত্যি হয়। গ্রাহামের শট থেকে মিসার রিবাউন্ডে পায়োর বুকের স্পর্শে আসে বার্সার দ্বিতীয় গোল।
হাফটাইমের আগেই ব্যবধান কমানোর দারুণ সুযোগ পান ক্যারোলিন উইয়ার, কিন্তু প্যারেদেস গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করেন। পায়োর আরেকটি শট দারুণভাবে ঠেকান কাইসেডো।
বিরতির পর বার্সেলোনা নিশ্চিত করতে চায় জয়। ভিকির নিচু শট ঠেকান মিসা, গ্রাহামের লব অল্পের জন্য বার ছুঁয়ে যায়। ইনজুরি থেকে ফিরলেও শুরুতে না থাকা আইতানা নামে দ্বিতীয়ার্ধে, আর রিয়ালও আথেনেয়া–আলবা–শাইলা—তিন পরিবর্তনে আক্রমণ বাড়ায়।
৭৫ মিনিটে কাটা–আথেনেয়া সংঘর্ষ থেকে দীর্ঘ আলোচনার পরে রেফারি দেন পেনাল্টি। দুই দলের বেঞ্চ উত্তেজনায় ফেটে পড়ে, দুই কোচিং স্টাফ সদস্যকে লাল কার্ডও দেখানো হয়। উইয়ারের নেওয়া শটটা দারুণভাবে বাঁচিয়ে দেন কাটা—এক কথায় বার্সার ‘সেভ অব দ্য ম্যাচ’।
এর কিছুক্ষণ পর আথেনেয়ারের আরেকটি ওয়ান-অন-ওয়ান সেভ করেন তিনি।
ইনজুরিতে স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়েন ব্রুগ্টস—বার্সার একমাত্র দুঃসংবাদ। কিন্তু ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে কাতালানরা, আর যোগ করা সময়ে আসে আরও দুই গোল।
৩৬,২৭৬ দর্শকের সামনে বার্সেলোনার এই ৪–০ জয় শুধু ক্লাসিকোর ইতিহাসে আরেকটি বড় ব্যবধানই নয়, বরং লিগ শিরোপার দৌড়ে রিয়ালের ওপর চাপ বাড়ানোরও বার্তা।
মন্তব্য করুন