আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) সনদ অনুযায়ী সাজানো বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) গঠনতন্ত্র; যা দিয়ে মসৃণভাবে কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার কথা। দুটি সঠিকভাবে অনুসরণ করা হলে জটিলতার সুযোগ থাকার কথা নয়। কিন্তু সংস্থার কার্যক্রম নিয়ে নানা অসংগতি ফুটে উঠছে। অসংগতি নিয়ে বুধবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিওএর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)।
বর্তমান মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজার নাম সর্বশেষ মহাসচিব হিসেবে প্রথমে কাউন্সিলর তালিকায় যুক্ত করা হয়েছিল। বর্তমান মহাসচিবের পদে থেকে কীভাবে ‘সর্বশেষ মহাসচিব’ হওয়া যায়—এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরবর্তী সময়ে হালনাগাদ করা কাউন্সিলর তালিকায় সাবেক মহাসচিব কুতুব উদ্দিন আহমেদকে ‘সর্বশেষ মহাসচিব’ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তটা আদৌ আইনসিদ্ধ কি না—এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ ২০১২ সালে দায়িত্ব ছেড়েছেন কুতুব উদ্দিন আহমেদ। পরবর্তী সময়ে তিনটি এজিএম অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার দুটি এজিএম-এ ‘সর্বশেষ মহাসচিব’ হিসেবে ছিলেন সৈয়দ শাহেদ রেজা। এখন আবার ‘সর্বশেষ মহাসচিব’ করা হয়েছে কুতুব উদ্দিন আহমেদকে। বিষয়টি কি আদৌ আইনসিদ্ধ!
আইওসি সনদের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক থাকতে পারবে না কোনো জাতীয় অলিম্পিক কমিটির (এনওসি) গঠনতন্ত্র। কিন্তু বিওএ গঠনতন্ত্রের একাধিক বিষয় সরাসরি আইওসি সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যার অন্যতম বিওএ নির্বাহী কমিটিতে দুই মেয়াদের বেশি নির্বাচন করা এবং বয়স সংক্রান্ত নির্দেশনা না মানা। এ নিয়ে সর্বশেষ নির্বাহী কমিটির সভায় আপত্তি জানিয়েছে বিভিন্ন সদস্য। এ ছাড়া সংশোধনের জন্য তোলা প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রের নানা অসংগতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, যা আমলে নিয়ে অসংগতি দূর করে গঠনতন্ত্র সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিওএ পরিচালনায় নানা অসংগতি নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে (এনএসসি) বিভিন্ন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে সম্প্রতি এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় সাধারণ সম্পাদকদের নানা ইস্যুতে কথা বলার জন্য প্রলুদ্ধ করা হয়েছে বলে কালবেলা নিশ্চিত হয়েছে। এনএসসি থেকে বলা হচ্ছে, দেশের ক্রীড়াঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসেবে বিওএতে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা জরুরি। এনএসসির এমন উদ্যোগকে অনেকে বিওএ নির্বাচনের আগে সরকারের হস্তক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করছেন। যদিও এ দাবির পক্ষে গ্রহণযোগ্য যুক্তি দিতে পারেননি তারা।
এদিকে এজিএমের আগে হালনাগাদ করা হয়েছে কাউন্সিলর তালিকা। সে তালিকায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন কোনো প্রতিনিধি পাঠায়নি। ছয় বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা দুজন করে প্রতিনিধি পাঠালেও বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগ হাঁটছে ভিন্ন পথে—দুটি সংস্থা থেকে কাউন্সিলর হিসেবে কারও নাম পাঠানো হয়নি। বিওএ সভাপতি চারজন ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে কাউন্সিলর মনোনীত করতে পারেন। সে কোটায় অঞ্জন চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. সানাউল হক, জোবায়েদুর রহমান ও মেজর (অব.) ইমরোজ আহমেদকে মনোনীত করা হয়েছে। বিওএর চিফ প্যাট্রন হচ্ছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা। চিফ প্যাট্রন প্রতিষ্ঠিত চার ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে কাউন্সিলর মনোনীত করতে পারেন। সে কোটায় কাজী রাজিবউদ্দিন আহমেদ চপল, জোবেরা রহমান লিনু, সাখাওয়াত হোসেন ও মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমানকে মনোনীত করা হয়েছে। দুই অলিম্পিয়ান হিসেবে কাউন্সিলর মনোনীত হয়েছেন স্প্রিন্টার শিরিন আক্তার ও শুটার আব্দুল্লাহেল বাকী।
মন্তব্য করুন