ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যা চলছে তা যে কোনো নৃশংসতাকেও হার মানায়। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর অভিযানে প্রতিদিনই সেখানে মৃত্যুবরণ করছেন হাজার-হাজার নিরীহ মানুষ। সামরিক বাহিনীর নৃশংসতা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালও। বিশেষ করে প্রতিদিন শিশুদের মৃত্যু নাড়া দিয়ে গিয়েছে সর্বস্তরের মানুষকে। যার মধ্যে রয়েছেন তিউনিশিয়ার টেনিস তারকা ওনস জাবেউর।
সম্প্রতি উইমেন্স টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউটিএ) আয়োজিত ডব্লিউটিএ টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছেন ওনস জাবেউর। মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় চেক প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কেতা ভন্দ্রোসোভাকে হারান তিনি।
টানা দুবার উইম্বলডনের ফাইনালে উঠেছিলেন ওনস জাবেউর। কিন্তু দুবারই স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়তে হয়েছে এই তিউনিসিয়ান টেনিস তারকাকে। চলতি বছরের জুলাইয়ে তার বিপক্ষে উইম্বলডনের নারী এককের শিরোপা জিতেছিলেন মার্কেতা ভন্দ্রোসোভা। এবার সেই প্রতিপক্ষকে হারিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছেন জাবেউর। জয়ের পরও তার মুখে হাসি নেই। গাজায় যুদ্ধের ভয়াবহতায় তার মন কাঁদছে। তাই তো টুর্নামেন্ট থেকে পাওয়া পুরস্কারের অর্থ ফিলিস্তিনিদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে টুর্নামেন্ট জেতার পর উদযাপনের সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন ওনস। জানান, ইসরাইলের নির্বিচার বিমান হামলায় ফিলিস্তিনি মানুষের ভয়াবহ অবস্থা তাকে বিষণ্ন করে তুলেছে।
ম্যাচ জয়ের পর উপস্থাপক যখন জিজ্ঞেস করেন, খুশি লাগছে কিনা। উত্তরে ওনস বলেন, 'জয়ের জন্য আমি খুবই খুশি। তবে আমি পুরোপুরি খুশি নই। বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি আমাকে খুশি থাকতে দিচ্ছে না।' এই কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিউনিশিয়ান তারকা।
এরপর ওনস বলেন, ‘প্রতিদিন শিশুরা মারা যাচ্ছে, এটা দেখা খুবই কষ্টকর। এটা হৃদয়বিদারক। আমি আমার পুরস্কারের একটি অংশ ফিলিস্তিনের নাগরিকদের দান করতে চাই। আমি এই জয়ে খুশি হতে পারছি না। এটা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নয়। এটা মানবতা। আমি বিশ্বে শান্তি চাই।’
সামাজিকমাধ্যমে প্রতিনিয়ত এসব সহিংসতার ঘটনা দেখার প্রসঙ্গ টেনে তিউনিসিয়ান তারকা বলেন, ‘ভিডিও, ফটো নিয়মিত আপনি দেখতে পাবেন। এতে আমি ঠিকমতো ঘুমোতে পারছি না। এ কারণে সামাজিকমাধ্যম থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করছি।’
জানা গেছে, গাজায় ইসরায়েলি সহিংসতায় কমপক্ষে ৯ হাজার ৬১ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা হলো ৩ হাজার ৭৬০ জন।
মন্তব্য করুন