কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪, ১১:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সত্যিই কী নূহ নবীর সেই নৌকার সন্ধান পাওয়া গেছে?

খোঁজ পাওয়া নৌকার ধ্বংসাবশেষ। ছবি : সংগৃহীত
খোঁজ পাওয়া নৌকার ধ্বংসাবশেষ। ছবি : সংগৃহীত

হযরত নূহ (আ.) ছিলেন একজন নবী, যাকে সৃষ্টিকর্তা পাঠিয়েছিলেন মানবজাতির পথপ্রদর্শক হিসেবে। ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মকে সেমেটিক ধর্ম বলা হয়। এসব ধর্মের অনুসারীরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে নূহ (আ.) এমন একটি নৌকা বানিয়েছিলেন, মহাপ্লাবনের সময় যেটিতে আশ্রয় নিয়ে মানুষ ও পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণিকূল নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করেছিল।

সম্প্রতি একদল গবেষক দাবি করেছেন তারা অন্তত পাঁচ হাজার বছর আগের একটি পুরোনো নৌকার ‘ধ্বংসাবশেষ’ খুঁজে পেয়েছেন। এ নৌকাটিকেই নূহ (আ.)-এর নৌকার ধ্বংসাবশেষ বলেই ধারণা করছেন গবেষকরা।

খ্রিস্টানদের ধর্মীয় গ্রন্থ বাইবেল এবং মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ আল কোরআনে নূহ (আ.)-এর নৌকা বানানোর প্রেক্ষাপট ও মহাপ্লাবনের প্রায় একই ধরনের দুটি বর্ণনা পাওয়া যায়। খ্রিস্টান পণ্ডিতদের মতে, নূহ (আ.) ছিলেন আদমের বংশের দশম উত্তরাধিকারী।

মহাপ্লাবনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বাইবেলের আদি পুস্তক ‘দ্য বুক অব জেনেসিসে’ বলা হয়েছে, আদমের মৃত্যুর অনেক বছর পর পৃথিবীর মানুষ সৃষ্টিকর্তাকে ভুলে গিয়ে হানাহানি ও অন্যান্য খারাপ কাজে লিপ্ত ছিল। তাদেরকে সঠিক পথে ফেরানোর জন্য সৃষ্টিকর্তা নূহ (আ.)-কে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তখনকার অধিকাংশ মানুষই নূহ (আ.)-এর দেখানো পথে হাঁটেনি। এমন পরিস্থিতিতে সৃষ্টিকর্তা সিদ্ধান্ত নিলেন, এক মহাপ্লাবন সৃষ্টি করে তিনি বিপথগামীদের ধ্বংস করে দিবেন। এরপর নূহ (আ.)-কে বড় আকৃতির একটি নৌকা বানাতে বলা হয়। বাইবেলের বর্ণনা অনুযায়ী, লম্বায় নৌকাটির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় পাঁচশ ফুট। গফার বা সাইপ্রাস গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি নৌকাটির তিনটি আলাদা তলা এবং একটি দরজা ছিল।

বানানোর পর নৌকাটির ভেতরে ও বাইরে পিচ লাগানো হয় যেন পানিতে কাঠ নষ্ট হয়ে না যায়। এরপর পশু ও পাখির মধ্য থেকে নারী-পুরুষ মিলিয়ে প্রতিটির সাতটি করে জোড়া নৌকাটিতে তোলা হয়।

জোড়ায় জোড়ায় পশু-পাখি তোলার পর নূহ (আ.) তার পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে নৌকায় ওঠেন। এরপর সৃষ্টিকর্তা নৌকার দরজা বন্ধ করে দেন। দ্য বুক অব জেনেসিসের বর্ণনা অনুযায়ী, তিন তলা নৌকার নিচতলায় জন্তু-জানোয়ার, ‎দোতলায় মানুষ এবং ওপরের তলায় পাখিদের রাখা হয়।

এরপর শুরু হয় মহাপ্লাবন। প্রায় ৪০ দিন এবং ৪০ রাত ধরে মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়। তখন পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের চূড়া না ডোবা পর্যন্ত পানি বাড়তে থাকে বলে বাইবেলের বর্ণনায় উঠে এসেছে। এই মহাপ্লাবন ১৫০ দিন স্থায়ী হয়েছিল। ফলে নূহ (আ.)-এর নৌকার বাইরে পৃথিবীর আর কোথাও কোনও প্রাণের অস্তিত্ব ছিল না বলে বাইবেলে বলা হয়েছে। পাঁচ মাস পর পানি কমতে শুরু করে। এরপর নূহ (আ.)-এর নৌকা আরারাত পাহাড়ে অবস্থান নেয়। মুসলমানদের ধর্মীয়গ্রন্থ আল কোরআনেও ঘটনাটিকে প্রায় একইভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে বাইবেলের বর্ণনায় যেখানে প্রতিটি পশু-পাখির সাতটি করে জোড়া নৌকায় তোলার কথা বলা হয়েছে, সেখানে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে একটি করে জোড়ার কথা।

এছাড়া দেড়শ দিন ভেসে বেড়ানোর পর নূহ (আ.)-এর নৌকাটি জুদি নামের একটি পর্বতে নোঙর ফেলে বলে কোরআনের বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামি পণ্ডিতদের অনেকেই মনে করেন, জুদি পর্বতটি তুরস্কের আরারাত পর্বতমালারই একটি অংশ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিশ্ববাজারে আবারও স্বর্ণের রেকর্ড দাম

আরও ছয় পুলিশ পেলেন বিপিএম ও পিপিএম পদক

ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ট্রাম্পের ভাষণে হট্টগোল, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির দাবি

ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু

গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, আসামিরা পলাতক

সংকটে মালদ্বীপ প্রবাসীরা, দেশত্যাগের মুখে ২৭ হাজার শ্রমিক

সৌদি থেকে ফেরত আনা হলো ৩৮ কোটি টাকা

আলু যেন গলার কাঁটা

এবার ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়ে ইসিতে আরেক দলের আবেদন

অকেজো সরঞ্জাম, ব্যবহারিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

১০

দাম বাড়ল ভোজ্যতেলের

১১

চমেকে এসি বিস্ফোরণে একজনের মৃত্যু

১২

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে ভয়াবহ সহিংসতা, নিহত ৫

১৩

ব্যক্তির নাম সরিয়ে ১৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন

১৪

এবার সব সরকারি কলেজে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

১৫

বর্ণাঢ্য আয়োজনে স্টেট ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগে নবীনবরণ

১৬

খুলনা সদর আসনে ধানের শীষের দাবিদার যারা

১৭

দিনদুপুরে প্রকাশ্যে যুবককে গলা কেটে হত্যা

১৮

প্ল্যান গণমাধ্যম পুরস্কার পেলেন কালবেলার জাফর ইকবাল

১৯

কুয়াকাটায় ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ নারীর মৃত্যু

২০
X