শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪, ১১:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সত্যিই কী নূহ নবীর সেই নৌকার সন্ধান পাওয়া গেছে?

খোঁজ পাওয়া নৌকার ধ্বংসাবশেষ। ছবি : সংগৃহীত
খোঁজ পাওয়া নৌকার ধ্বংসাবশেষ। ছবি : সংগৃহীত

হযরত নূহ (আ.) ছিলেন একজন নবী, যাকে সৃষ্টিকর্তা পাঠিয়েছিলেন মানবজাতির পথপ্রদর্শক হিসেবে। ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মকে সেমেটিক ধর্ম বলা হয়। এসব ধর্মের অনুসারীরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে নূহ (আ.) এমন একটি নৌকা বানিয়েছিলেন, মহাপ্লাবনের সময় যেটিতে আশ্রয় নিয়ে মানুষ ও পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণিকূল নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করেছিল।

সম্প্রতি একদল গবেষক দাবি করেছেন তারা অন্তত পাঁচ হাজার বছর আগের একটি পুরোনো নৌকার ‘ধ্বংসাবশেষ’ খুঁজে পেয়েছেন। এ নৌকাটিকেই নূহ (আ.)-এর নৌকার ধ্বংসাবশেষ বলেই ধারণা করছেন গবেষকরা।

খ্রিস্টানদের ধর্মীয় গ্রন্থ বাইবেল এবং মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ আল কোরআনে নূহ (আ.)-এর নৌকা বানানোর প্রেক্ষাপট ও মহাপ্লাবনের প্রায় একই ধরনের দুটি বর্ণনা পাওয়া যায়। খ্রিস্টান পণ্ডিতদের মতে, নূহ (আ.) ছিলেন আদমের বংশের দশম উত্তরাধিকারী।

মহাপ্লাবনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বাইবেলের আদি পুস্তক ‘দ্য বুক অব জেনেসিসে’ বলা হয়েছে, আদমের মৃত্যুর অনেক বছর পর পৃথিবীর মানুষ সৃষ্টিকর্তাকে ভুলে গিয়ে হানাহানি ও অন্যান্য খারাপ কাজে লিপ্ত ছিল। তাদেরকে সঠিক পথে ফেরানোর জন্য সৃষ্টিকর্তা নূহ (আ.)-কে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তখনকার অধিকাংশ মানুষই নূহ (আ.)-এর দেখানো পথে হাঁটেনি। এমন পরিস্থিতিতে সৃষ্টিকর্তা সিদ্ধান্ত নিলেন, এক মহাপ্লাবন সৃষ্টি করে তিনি বিপথগামীদের ধ্বংস করে দিবেন। এরপর নূহ (আ.)-কে বড় আকৃতির একটি নৌকা বানাতে বলা হয়। বাইবেলের বর্ণনা অনুযায়ী, লম্বায় নৌকাটির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় পাঁচশ ফুট। গফার বা সাইপ্রাস গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি নৌকাটির তিনটি আলাদা তলা এবং একটি দরজা ছিল।

বানানোর পর নৌকাটির ভেতরে ও বাইরে পিচ লাগানো হয় যেন পানিতে কাঠ নষ্ট হয়ে না যায়। এরপর পশু ও পাখির মধ্য থেকে নারী-পুরুষ মিলিয়ে প্রতিটির সাতটি করে জোড়া নৌকাটিতে তোলা হয়।

জোড়ায় জোড়ায় পশু-পাখি তোলার পর নূহ (আ.) তার পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে নৌকায় ওঠেন। এরপর সৃষ্টিকর্তা নৌকার দরজা বন্ধ করে দেন। দ্য বুক অব জেনেসিসের বর্ণনা অনুযায়ী, তিন তলা নৌকার নিচতলায় জন্তু-জানোয়ার, ‎দোতলায় মানুষ এবং ওপরের তলায় পাখিদের রাখা হয়।

এরপর শুরু হয় মহাপ্লাবন। প্রায় ৪০ দিন এবং ৪০ রাত ধরে মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়। তখন পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের চূড়া না ডোবা পর্যন্ত পানি বাড়তে থাকে বলে বাইবেলের বর্ণনায় উঠে এসেছে। এই মহাপ্লাবন ১৫০ দিন স্থায়ী হয়েছিল। ফলে নূহ (আ.)-এর নৌকার বাইরে পৃথিবীর আর কোথাও কোনও প্রাণের অস্তিত্ব ছিল না বলে বাইবেলে বলা হয়েছে। পাঁচ মাস পর পানি কমতে শুরু করে। এরপর নূহ (আ.)-এর নৌকা আরারাত পাহাড়ে অবস্থান নেয়। মুসলমানদের ধর্মীয়গ্রন্থ আল কোরআনেও ঘটনাটিকে প্রায় একইভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে বাইবেলের বর্ণনায় যেখানে প্রতিটি পশু-পাখির সাতটি করে জোড়া নৌকায় তোলার কথা বলা হয়েছে, সেখানে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে একটি করে জোড়ার কথা।

এছাড়া দেড়শ দিন ভেসে বেড়ানোর পর নূহ (আ.)-এর নৌকাটি জুদি নামের একটি পর্বতে নোঙর ফেলে বলে কোরআনের বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামি পণ্ডিতদের অনেকেই মনে করেন, জুদি পর্বতটি তুরস্কের আরারাত পর্বতমালারই একটি অংশ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঈদে নীল পোশাকে মিমের মুগ্ধতা

হানাহানির রাজনীতি ফিরে আসুক কখনই চাই না : হান্নান মাসউদ

দেশে দেশে যেভাবে পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা

গরুর মাংসের ৫টি জনপ্রিয় বিদেশি রেসিপি

রেকর্ড ভাঙলেন অক্ষয়

হঠাৎ ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ায়, কী হচ্ছে সেখানে?

ঈদের দিন স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা করলেন স্বামী

ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইরানের কড়া প্রতিক্রিয়া

গরুর মাংসের ১০টি ভিন্ন স্বাদের রেসিপি

ঈদের নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরা হলো না বাবা-ছেলের

১০

এপ্রিল মাস নির্বাচনের জন্য অনুপযুক্ত : ফখরুল

১১

‘স্যার পাঁচ বছর, দালালদের কথা শুনবেন না’

১২

ভোটের সমতল মাঠ থাকলে রোডম্যাপ অনুযায়ী নির্বাচন হবে : ডা. শফিকুর রহমান

১৩

ব্রাজিল দলের কোচিং স্টাফে যোগ দিলেন আনচেলত্তির ছেলে

১৪

ট্রেনেই প্রাণ গেল ভারতীয় ক্রিকেটারের, রেল কর্তৃপক্ষকে দুষলেন সতীর্থরা

১৫

লড়াই করে আদায় করতে হয়েছে গরু কোরবানির অধিকারও

১৬

সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল মায়ের

১৭

সম্পর্কে বয়সের ফারাক কত হলে বিচ্ছেদের ঝুঁকি কম, কী বলছে গবেষণা

১৮

ক্যাবরেরার চোখে ঈদের সেরা উপহার হবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জয়

১৯

ভাড়া করা বিদেশি সরকারের রাজনীতি আর চলবে না : ইশরাক 

২০
X