সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনা এখন প্রায় নিত্যদিনের খবর। বেশিভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ভুক্তভোগীরা নিজেরা ইচ্ছা করে কিছু ভাইরাল করেন না। তবে, হ্যাকার হানা, প্রতারণা কিংবা সম্পর্কের টানাপড়েন—সব মিলিয়ে ঝুঁকির পরিধি বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, কয়েকটি ভুল অভ্যাস বদলাতে পারলে অনেকটাই কমানো যায় এই ঝুঁকি।
কেন ভাইরাল হয় ব্যক্তিগত কনটেন্ট
পুলিশি তদন্ত ও সাইবার বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রে সম্পর্কের অবনতি বা বিশ্বাসভঙ্গের জেরে ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও বাইরে চলে যায়। এ ছাড়া ব্ল্যাকমেল বা আর্থিক লাভের উদ্দেশ্যে হ্যাকাররাও এগুলোকে হাতিয়ার বানায়। হোটেল কক্ষে লুকানো ক্যামেরা বসানো, অচেনা লিংকে ক্লিক করিয়ে ফোনে ক্ষতিকর অ্যাপ ঢুকিয়ে দেওয়া কিংবা ফ্রি ক্লাউড-লিংকের ফাঁদেও পড়েন অনেকে।
ঝুঁকি বাড়ায় যে ৪ অভ্যাস–
১. সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক করা
ভাইরাল ভিডিও দেখার লোভে অনেকেই অচেনা লিংকে ক্লিক করেন। সেখান থেকে টেলিগ্রাম চ্যানেল বা বিভিন্ন ক্লাউড স্টোরেজে ঢুকে পড়েন। এতে অজান্তেই গ্যালারির অ্যাক্সেস দিয়ে ফেলেন ব্যবহারকারীরা। আর সেই সুযোগ কাজে লাগায় সাইবার অপরাধীরা।
২. ভুয়া অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড
অজান্তে ভুয়া বা সন্দেহজনক অ্যাপকে গ্যালারির অনুমতি দিয়ে ফেলেন অনেকেই। এতে সরাসরি ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও চলে যায় হ্যাকারদের হাতে।
৩. সম্পর্কের টানাপড়েন
পুলিশি তদন্তে দেখা গেছে, ব্যক্তিগত মুহূর্ত ভাইরাল হওয়ার অন্যতম কারণ হলো সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া বা বিশ্বাসঘাতকতা। সঙ্গীর হাতে ফাঁস হচ্ছে ব্যক্তিগত মুহূর্ত।
৪. হোটেল কক্ষের স্পাই ক্যামেরা
বিভিন্ন হোটেল কক্ষে লুকানো ক্যামেরার ফাঁদে পড়ে বহু মানুষ ব্যক্তিগত মুহূর্ত হারাচ্ছেন। পরে সেই ছবি বা ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
কীভাবে বাঁচবেন?
পারমিশন হাইজিন মানুন : অচেনা অ্যাপকে কখনোই Photos/Media/Camera/Microphone–এর অনুমতি দেবেন না। ফোনের Settings → Apps → Permissions গিয়ে সময় নিয়ে পরখ করুন, অপ্রয়োজনীয় অনুমতি বন্ধ করুন।
লিংক-শৃঙ্খলা : কোনো ভাইরাল ভিডিও/ফটো দেখার কথা বলে আসা লিংকে ক্লিক করবেন না। বিশেষ করে ব্রাউজার থেকে অ্যাপ ইন্সটল বা ‘Join/Download’ চাপতে বললে সতর্ক হোন।
আরও পড়ুন : চ্যাটজিপিটি-৫ নিয়ে বিতর্ক, নতুন মোডে আসছে ৩ পরিবর্তন
অফিসিয়াল স্টোর ব্যবহার করুন : অ্যাপ নামালেই হবে না—রেভিউ, ডাউনলোড সংখ্যা, প্রকাশকের পরিচয় দেখে নিন। Unknown Sources/Install unknown apps বন্ধ রাখুন।
ক্লাউড ব্যাকআপ বুদ্ধিমানের মতো : স্বয়ংক্রিয় ব্যাকআপ চালু থাকলে ব্যাকআপ ফোল্ডার এনক্রিপ্ট করুন, দুই স্তরের নিরাপত্তা (2FA) চালু রাখুন এবং শেয়ার্ড-লিংক সীমিত রাখুন।
ডিভাইস সুরক্ষা : ফোনে শক্তিশালী পাসকোড/বায়োমেট্রিক, স্ক্রিন-লক টাইমআউট কম, Find My Device চালু, নিয়মিত সফটওয়্যার/সিকিউরিটি আপডেট ইনস্টল করুন।
হোটেল রুমে সতর্কতা : অস্বাভাবিক স্থানে (ধোঁয়া-সেন্সর, চার্জার, ঘড়ি, টিভির নিচে) লেন্সের মতো জিনিস দেখলে পরীক্ষা করুন। ফ্ল্যাট/রুম নেওয়ার পর আলো কমিয়ে টর্চ বা ফোনের ফ্ল্যাশে লেন্সের ঝিলিক আছে কি না দেখে নিন।
সূত্র : আনন্দবাজার ডটকম
মন্তব্য করুন