কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:২৫ পিএম
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

টেলিটকের ই-সিম চালু

আইসিটি টাওয়ারে ই-সিম সেবার উদ্বোধন করেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ছবি : কালবেলা
আইসিটি টাওয়ারে ই-সিম সেবার উদ্বোধন করেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ছবি : কালবেলা

রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর টেলিটকের ই-সিম সেবা চালু হয়েছে। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে এ সেবা উদ্বোধন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

এদিন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ভাষা শহীদ স্মরণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন বাংলা ভাষাভিত্তিক তিনটি সফটওয়্যার বাংলা টেক্সট টু স্পিচ ‘উচ্চারণ’, বাংলা স্পিচ টু টেক্সট ‘কথা’ এবং বাংলা ওসিআর ‘বর্ণ’ -সহ নতুন একটি বাংলা ফন্ট ‘পূর্ণ’ উন্মুক্ত করেন তিনি। পাশাপাশি অমর একুশের ভাষাশহীদদের স্মরণে বিটিসিএলের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ ‘জিপন’ এর বিশেষ সাশ্রয়ী প্যাকেজও ঘোষণা করেন।

বাংলা টেক্সট টু স্পিচ ‘উচ্চারণ’ হল একটি টিটিএস সফটওয়্যার। লেখাকে মেশিনের মাধ্যমে উচ্চারিত কথায় রূপান্তর করার প্রযুক্তিকে টিটিএস বা টেক্সট টু স্পিচ অ্যাপ্লিকেশন বলা হয়ে থাকে। টিটিএস ডকুমেন্ট, ওয়েবসাইট, স্ক্রিনের উইন্ডোতে থাকা টেক্সট পড়ে শোনাতে পারে। একই সঙ্গে তা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য উপযোগী হয়ে পড়ে শোনাতে পারে। উক্ত সফটওয়্যারটিতে মহিলা ও পুরুষ উভয় কণ্ঠই রয়েছে। বর্তমানে read.bangla.gov.bd ঠিকানা থেকে সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা যাবে।

‘কথা’ হল বাংলা ভয়েস টাইপিং সফটওয়্যার। মুখের কথার মাধ্যমে কম্পিউটারে লেখার প্রযুক্তি হলো ভয়েস টাইপিং বা ‘স্পিচ টু টেক্সট’। এটি প্রমিত স্পষ্ট ও নীরব পরিবেশে উচ্চারিত বাংলা কথাকে লেখায় রূপান্তর করতে পারে। সফটওয়্যারটির চূড়ান্ত ভার্সন বাংলা প্রধান বিরাম চিহ্নগুলোকে লিপিবদ্ধ করতে পারে। ব্রাউজার থেকে একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে voice.bangla.gov.bd ঠিকানা লিখে সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা যাবে।

এছাড়াও, প্রকল্পের তৈরি কিবোর্ড অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের মাধ্যমেও এই ভয়েস টাইপিং সার্ভিসটি ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে। বাংলা ওসিআর এর নাম হল ‘বর্ণ’। ওসিআর-এর সাহায্যে কম্পিউটারের অপরিবর্তনযোগ্য ডকুমেন্টের লেখাকে এডিটেবল টেক্সটে রূপান্তর করা যায়। ওসিআর হলো পিডিএফ বা জেপেগ ফাইলের লেখাকে পরিবর্তনযোগ্য লেখায় রূপান্তর করা। এই বর্ণ ওসিআরটি বাংলা লেখাকে কম্পোজকৃত লেখার অনুরূপ টেক্সটে রূপান্তর করে থাকে। অর্থাৎ কোনো ডকুমেন্টকে ছবি তুলে বা স্ক্যান করে ওসিআর করলে তা কম্পোজড হয়ে যায়। বর্ণ ওসিআরটির বেশকিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি কম্পিউটার কম্পোজ ডকুমেন্ট বিশেষ করে সরকারি পত্র, বিজ্ঞপ্তি ওসিআর করতে পারে। এর মাধ্যমে টেবিল, কমন ইংরেজি শব্দ ও প্রতিষ্ঠানের নাম, সরকারি প্রতিষ্ঠানের লোগো শনাক্ত করা যায়। এছাড়াও, পুরোনো টাইপরাইটার ডকুমেন্ট ও লেটারপ্রেস বইও ওসিআর করতে পারে অ্যাপ্লিকেশনটি। ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে যে কোনো ব্রাউজার থেকে ocr.bangla.gov.bd ঠিকানা লিখে সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা যায়।

‘পূর্ণ’ ফন্ট একটি অনন্য সাধারণ বাংলা ইউনিকোড ফন্ট যা ফন্ট সংক্রান্ত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার পর ডিজাইন ও ডেভেলপ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলা প্রকাশনায় প্রয়োজনীয় সকল টাইপোগ্রাফিক ফিচার। একই সঙ্গে বাংলা ভাষার বৈশিষ্ট্যকেও যথাযথভাবে প্রকাশ করছে এই ফন্ট। প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবহার ছাড়াও এই ফন্ট মুদ্রণ কাজে এবং ওয়েবে ব্যবহার উপযোগী। ফন্টে স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ, বিরাম চিহ্ন, ইংরেজি বর্ণ, গাণিতিক চিহ্ন, অসমীয়া স্বতন্ত্র সেট, ইন্ডিক-বাংলা সমর্থনকারী গ্লিফ, হোমোগ্রাফ, জনপ্রিয় আইকন/লোগোসহ প্রয়োজনীয় সকল গ্লিফ রয়েছে। ফন্টটির কিছু বৈশিষ্ট্যে রয়েছে। যেমন, স্বতন্ত্র ভিজুয়াল রূপ, একাধিক অ্যালোগ্রাফ, ল্যাটিন গ্লিফের সমতুল্য উচ্চতা, স্ট্যান্ডার্ড লাইন স্পেস এবং আকার এবং অপ্টিমাইজ করা গ্লিফ নম্বর, স্বচ্ছ ও সনাতন যুক্তবর্ণ উভয়ের সংযুক্তি ইত্যাদি। ফন্টটির স্বাভাবিক ভার্সন ছাড়াও বোল্ড, ইটালিক রূপ রয়েছে। ফন্টটি https://bangla.gov.bd/fonts/ ঠিকানা থেকে ডাউনলোড করা যাবে।

ই- সিমের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ই-সিম হলো এমবেডেড সাবস্ক্রাইবার আইডেন্টিটি মডিউল। এটি ফিজিক্যাল সিম কার্ডের মতো নয়। এটি ফোনে ইনস্টল করা ভার্চুয়াল সিম, যেটি কোন মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে তৃতীয় পক্ষীয় সফটওয়্যারের সহায়তায় মোবাইল নম্বর বরাদ্দপূর্বক অনলাইনে সক্রিয় করা হয়। ই-সিমের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, বারবার খোলার ঝামেলাই যেহেতু নেই, তাই এ সিম নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কা নেই। এ ছাড়া একই সঙ্গে একাধিক নম্বর ব্যবহার করা যায়। ব্রান্ডভেদে একসঙ্গে এক ফোনে পাঁচটি পর্যন্ত ই-সিম ব্যবহার করা যায়। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ই-সিমের ব্যবহার বেড়ে হবে ৩.৪ বিলিয়ন।

বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহি পরিচালক রণজিৎ কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলি মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

এর আগে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব এবং আইসিটি বিভাগের সচিবসহ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর ও সংস্থাসমূহের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জাল সনদে এমপিও আবেদনে মাদ্রাসাশিক্ষকদের কঠোর নির্দেশনা অধিদপ্তরের

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু আলোচনা থমকে গেল পাঁচ কারণে

অ্যাশেজের টানা কনসার্ট

চবির ব্যাচ-৪২ এর সভাপতি তাহিরা মিশু, সম্পাদক আলীমুল 

দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা

সড়কজুড়ে গর্ত, সংস্কারে উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের

গণ-অভ্যুত্থানসহ জাতীয় আন্দোলনের অনুপ্রেরণা ছিল কাজী নজরুল : রিজভী

সৌদি পৌঁছেছেন ৫৯ হাজার ১০১ হজযাত্রী

পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার সেই নীলগাইয়ের মৃত্যু

গোপনে ভিডিও ধারণ, ছাত্রীকে হল থেকে বের করে দিলেন শিক্ষার্থীরা

১০

টিভিতে আজকের খেলা

১১

২৫ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১২

গাজায় করুণ পরিণতি, ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে শিশুরা

১৩

আম পাড়তে গিয়ে ডোবায় পড়ে ২ শিশুর মৃত্যু

১৪

রোববার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৫

ঈদযাত্রায় ট্রেনের ৪ জুনের টিকিট মিলছে আজ

১৬

হার্ভার্ডের দরজা বন্ধ, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ডাকছে হংকং

১৭

ঋতুর ছন্দপতনে গ্রীষ্মেই ফুটেছে বর্ষার কদম

১৮

পরমাণু আলোচনা / কোন পথে যাচ্ছে পরিস্থিতি?

১৯

বগুড়ায় বাসচাপায় দাদি-নাতি নিহত

২০
X