কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:৩৯ পিএম
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:০০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে

ব্রিটিশ কাউন্সিলের সিম্পোজিয়াম
ঢাকার ফুলার রোডে ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়োজিত সিম্পোজিয়াম। ছবি : সংগৃহীত
ঢাকার ফুলার রোডে ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়োজিত সিম্পোজিয়াম। ছবি : সংগৃহীত

ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়োজিত সিম্পোজিয়ামে বক্তারা বলেছেন, বিদ্যমান নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জাতীয় উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হলে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (স্টেম) শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। গত মঙ্গলবার ঢাকার ফুলার রোডে ব্রিটিশ কাউন্সিলে এই সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি জেন্ডার অ্যাসেসমেন্ট ২০২১ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের সকল স্টেম পেশাজীবীদের মধ্যে নারীর সংখ্যা মাত্র ১৪ শতাংশ। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুসারে, আগামী দুই দশকের মধ্যে স্টেমবিষয়ক দক্ষতার প্রয়োজন নেই নারীদের জন্য এমন চাকরি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। যদিও নারী শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক উভয় পর্যায়ে পুরুষ শিক্ষার্থীদের তুলনায় ভালো করছে, উচ্চশিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অনেক কম। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, সরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাত্র ৩৮ শতাংশ এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাত্র ৪৫ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী স্টেম বিষয়ে পড়ালেখা করেন।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশের সামনে এখন অর্থনৈতিক স্থবিরতা থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক মহামারি ও ক্রমবর্ধমান বৈষম্যসহ বিভিন্ন কঠিন চ্যালেঞ্জ আছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি-নির্ভর বিশ্বে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি দেশের উন্নয়ন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে এবং স্টেম সংক্রান্ত পেশায় নারীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

সিম্পোজিয়ামে ব্রিটিশ কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক অ্যাড্রিয়ান চ্যাডউইক বলেন, স্টেম ফিল্ডে লিঙ্গবৈষম্য একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। আমরা নারীদের কর্মজীবনের তিনটি মূল ধাপে (সুযোগ, অগ্রগতি এবং নেতৃত্ব) পরিবর্তন নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ করছি। যথেষ্ট সুযোগের অভাব (অ্যাক্সেস) স্টেম ফিল্ডে নারীদের তুলনামূলক কম প্রতিনিধিত্বের অন্তরায়। ২০১৮ সাল থেকে আমরা যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টেম বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভে দক্ষিণ এশিয়ার ১০০ জন নারীকে সহায়তা করেছি৷ অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে অংশীদারত্বে কাজ করছি এবং স্টেম ফিল্ডের নারীদের পেশাদার উন্নয়নে সহায়ক হবে এমন নীতি বাস্তবায়নে সাহায্য করছি। নেতৃত্বে বিকাশের জন্য আমরা মূল বাধাগুলো শনাক্ত করে নারীর ক্ষমতায়ন ত্বরান্বিত করার উপায় বের করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশেষ করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করে দক্ষিণ এশিয়ার এমন ১০০ জন নারীর পথচলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছি আমরা। সিম্পোজিয়ামে প্যানেল আলোচনা এবং একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। গোলটেবিল বৈঠক থেকে প্রাপ্ত ফলাফল গবেষণায় ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া, স্টেম ফিল্ডের সাথে জড়িত যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাদের পরবর্তী বছরের কার্যক্রম পরিচালনা করার ক্ষেত্রে দিক নির্দেশনা পাবেন।

ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার এবং ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর ম্যাট ক্যানেল বলেন, ‘স্টেম ফিল্ডের সাথে যুক্ত বাংলাদেশী নারীদের জন্য আয়োজিত এই সিম্পোজিয়ামে সম্ভাবনাময় পেশাজীবীদের মতামত ও ভাবনা জানতে পেরে আমি আনন্দিত। যুক্তরাজ্যের নতুন শ্বেতপত্র (হোয়াইট পেপার) অনুযায়ী, উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। নারীরা প্রযুক্তি-ভিত্তিক বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং সবার জন্য সমতাভিত্তিক টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য নারীদের প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি বাস্তবায়নে একসাথে কাজ করতে পেরে আনন্দিত। এই নীতি নারী ও মেয়েদের তাদের পরিপূর্ণ সম্ভাবনা বিকাশের জন্য ক্ষমতায়ন করবে। আসুন সবাই মিলে ব্যবধান ঘোচাতে কাজ করি এবং এমন একটি ভবিষ্যত তৈরি করি যেখানে লিঙ্গ-বৈষম্য সাফল্যের পথে কোন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।’

প্যানেল আলোচনায় বক্তা হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক হাসিনা খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আব্দুস ছামাদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ওয়াইল্ড টিমের বোর্ড সদস্য ডা. আলিফা বিনথা হক।

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি, টেকস্টার স্যাটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও টেকনো গ্রীন-কার্বন লিমিটেডের চেয়ারপার্সন আনিকা আলী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগ ড. মুস্তাক ইবনে আইয়ুব সিম্পোজিয়ামটি পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

২০ নভেম্বর : ইতিহাসের এই দিনে যা ঘটেছিল

অ্যাকাউন্টস বিভাগে নিয়োগ দিচ্ছে ইবনে সিনা

২০ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

তারেক রহমানের জন্মদিন আজ

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের দুইজন নিহত, আহত ৪

ফেনসিডিলসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আটক

জকসুতে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচন করবেন সাংবাদিক সম্পদ

দুর্নীতিবাজদের বর্জন করুন, জনগণের ভরসা হতে চাই : শাকিল উজ্জামান

১০

তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চাকরিচ্যুত

১১

টাকা বাঁচাতে লেভানদোভস্কিকে গোল করতে মানা করেছিল বার্সা!

১২

মুক্তিযুদ্ধকে বিএনপির মতো অন্য কোনো দল ধারণ করে না: শামা ওবায়েদ

১৩

মুশফিকের শততম টেস্টে হামজার বিশেষ বার্তা

১৪

ভারতকে হারিয়ে ফিফা থেকে সুখবর পেল বাংলাদেশ

১৫

রাজধানীতে ছিনতাইকারীদের কবলে বিচারক, খোয়ালেন মোবাইল-চশমা

১৬

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ছোট কাজে বড় অনিয়ম

১৭

লালদিয়া-পানগাঁও টার্মিনাল / ১০ বছরের করমুক্ত সুবিধা পাবে দুই বিদেশি কোম্পানি

১৮

রামপুরায় বাসে আগুন

১৯

যুবদলের পাঁচ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

২০
X