কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

সেকেন্ডেই সব ধ্বংস, কেন এই বোমার তাণ্ডব চালাল চীন

পারমাণবিক নয়, তবু ভয়ংকর হাইড্রোজেন বোমা। ছবি : সংগৃহীত
পারমাণবিক নয়, তবু ভয়ংকর হাইড্রোজেন বোমা। ছবি : সংগৃহীত

তাইওয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রকে ঘিরে উত্তেজনার মধ্যে চীন হাইড্রোজেনভিত্তিক ‘ক্লিন এনার্জি’ বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে। এটি মূলত ম্যাগনেশিয়াম হাইড্রাইড নামক একটি পদার্থ দিয়ে তৈরি। এই পরীক্ষা পরিচালনা করেছে চীনের সামরিক বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এবং এর পেছনে কাজ করেছে চীনা রাষ্ট্রীয় সংস্থা চায়না স্টেট শিপবিল্ডিং কর্পোরেশনের ৭০৫ নম্বর গবেষণা ইনস্টিটিউট।

নতুন ধরনের এই বোমা পারমাণবিক নয়, তবে এটি অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রার (১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) আগুনের গোলা তৈরি করতে পারে যা দুই সেকেন্ড ধরে জ্বলতে থাকে। ফলে খোলা জায়গায় ছড়িয়ে থাকা সেনাদের দমন, রাস্তাঘাট বা সেতু ধ্বংস, কিংবা একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে ‘সার্জিক্যাল’ হামলার জন্য এটি কার্যকর হতে পারে।

বোমাটি একবার বিস্ফোরিত হলে এটি নিজেই একটি চক্রাকারে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে আগুন বাড়াতে থাকে, যার ফলে বিস্ফোরণের মাত্রা ও প্রভাব একাধিক ধাপে বাড়ে। চীনের গবেষকরা বলছেন, এই বোমার আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি, যা অ্যালুমিনিয়ামের মতো ধাতুও গলিয়ে ফেলতে পারে।

চীন একদিকে যেমন তাইওয়ান ঘিরে সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পাওয়া তাইওয়ানকে ঘিরে ভবিষ্যৎ সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চীন পরমাণু অস্ত্র ছাড়া কৌশলগত আঘাত হানার সক্ষমতা তৈরি করতে চাইছে, যাতে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া সীমিত রাখা যায়।

চীন এই বোমাকে ‘ক্লিন এনার্জি অস্ত্র’ হিসেবে তুলে ধরলেও এর লক্ষ্য— শত্রু ঘাঁটি ধ্বংস করা, কৌশলগত এলাকা দখল রোধ, ও প্রয়োজন হলে নির্দিষ্ট এলাকায় অগ্নি-আক্রমণ চালানো।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ক্লিন এনার্জি ব্যবহার করে সামরিক আধুনিকায়ন করছে। এবার হাইড্রোজেনভিত্তিক বিস্ফোরক তৈরি করে চীন দেখাল— আধুনিক যুদ্ধেও পরিবেশবান্ধব শক্তি ব্যবহার করা সম্ভব।

এমনকি চীনের সেনাবাহিনীর জন্য ম্যাগনেশিয়াম হাইড্রাইডের বাণিজ্যিক উৎপাদনও শুরু হয়েছে, যা আগে কেবল ল্যাবেই তৈরি হতো। এই পদার্থ প্রতি বছর এখন ১৫০ টন পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব বলে দাবি করেছে চীন।

এই মাসেই চীন তাইওয়ান উপকূলে বড় পরিসরের যুদ্ধ মহড়া ও লাইভ ফায়ার ড্রিল চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে ‘ভয় দেখানো কৌশল’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছে, তারা তাইওয়ানের পাশে থাকবে।

এই উত্তেজনার মধ্যেই চীন স্পষ্ট করে দিয়েছে— তারা শুধু পরমাণু নয়, যুদ্ধের আরও উন্নত বিকল্প কৌশলেও প্রস্তুত।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএসইসির ২২ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত  

আদানি গ্রুপের কর ফাঁকির অভিযোগের অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক 

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বিজেআইএমের সিম্পোজিয়াম

যৌন নিপীড়নের অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষককে পদাবনতি

হিন্দু-মুসলিম আমরা এক বৃন্তে দুটি ফুল : মির্জা ফখরুল

বিবাহিতদের এএসপি পদে নিয়োগ না করার প্রস্তাব

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষ ঘেরাও কাস্টমস-ট্যাক্সের কয়েকশ কর্মকর্তার

উত্তরায় অপহরণের ঘটনায় প্রাইভেটকারসহ গ্রেপ্তার ২

ছেলেকে হত্যা করে থানায় বাবার আত্মসমর্পণ

পাকিস্তানের পারমাণু অস্ত্র কোথায় মজুত আছে?

১০

অভিনেতা সিদ্দিকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ

১১

টেস্টে ফেল করেও পরীক্ষার টেবিলে বসবে সেই ৫০ শিক্ষার্থী!

১২

১৭ বছর পর বাংলাদেশের ম্যাচ দিয়ে ফয়সালাবাদে ফিরছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

১৩

কুমিল্লায় দুই মামলায় আসামিপক্ষে আইনজীবীদের না দাঁড়ানোর নির্দেশ

১৪

বিদ্যুৎ সংকটের অবসান, পুরোদমে চলছে ডিইপিজেডে উৎপাদন

১৫

মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ

১৬

বন‍্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে গৃহ হস্তান্তর করলেন প্রধান উপদেষ্টা 

১৭

২০২৪ সালের বন্যা স্বাভাবিক ছিল না : প্রধান উপদেষ্টা 

১৮

তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হলেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আনসার উদ্দিন 

১৯

হলুদ ছেড়ে লাল জার্সির খবরে প্রশ্নের মুখে ব্রাজিল!

২০
X