

‘টুইটার খুনি’ নামে পরিচিত এক সিরিয়াল খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে জাপান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ করে টুইটারের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ৯ জনকে হত্যা করেন। তাদের বেশিরভাগই ছিলেন নারী। শুক্রবার (২৭ জুন) এই তথ্য জানিয়েছেন জাপানের বিচারমন্ত্রী। খবর সিএনএন ও আলজাজিরার।
প্রায় তিন বছর পর জাপানে এটি ছিল প্রথম মৃত্যুদণ্ড। ৩৪ বছর বয়সী তাকাহিরো শিরাইশির বিরুদ্ধে ২০২০ সালে আদালত অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তিনি আদালতে ৯ জনকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এটি ছিল একটি ভয়ংকর গণহত্যার মামলা, যা পুরো দেশকে সেই সময় আতঙ্কিত করে তোলে।
ওই একই বছরের ডিসেম্বরে তাকাহিরোকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ এবং মৃতদেহ কেটে ফেলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। নিহতদের দেহ তিনি টোকিওর উপকণ্ঠের জামা শহরের নিজের অ্যাপার্টমেন্টে রেখে দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
সূত্র জানায়, শিরাইশির ঘরে তিনটি কুলার বক্স এবং পাঁচটি কনটেইনার পাওয়া যায়, যেখানে মানুষের কাটা মাথা ও হাড় ছিল। হাড়গুলো থেকে মাংস তুলে ফেলা হয়েছিল।
নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮ জন নারী এবং ১ জন পুরুষ। তাদের সবার বয়স ছিল ১৫ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে। জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ও টিভি আসাহি জানায়, ভিকটিমরা সামাজিকমাধ্যমে আত্মহত্যার ইচ্ছার কথা লিখেছিলেন। শিরাইশি তাদের খুঁজে বের করে যোগাযোগ করেন। এরপর ভিকটিমদের দুর্বলতার সুযোগে ফাঁদে ফেলেন।
বিচারমন্ত্রী কেইসুকে সুজুকি শুক্রবার (২৭ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই ঘটনা ছিল একেবারে স্বার্থপর উদ্দেশ্যে। যৌন ও আর্থিক চাহিদা পূরণের জন্য। মাত্র দুই মাসে ৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এটি সমাজে ভয় ও উদ্বেগ ছড়িয়েছে। আমি জানি, এটি ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারদের জন্য অসহনীয় কষ্টের।’
এনএইচকের তথ্য অনুযায়ী, জাপানে সর্বশেষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল ২০২২ সালের জুলাইয়ে। দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড সাধারণত ফাঁসির মাধ্যমে দেওয়া হয়। কখন ফাঁসি কার্যকর হবে, তা আগে জানানো হয় না—মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পরই তা প্রকাশ করা হয়।
বিচারমন্ত্রী সুজুকি আরও জানান, এই রায় আদালতের সম্পূর্ণ বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত করা হয়েছে। সব দিক বিচার করেই তিনি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন