জাপানের মানুষ সাধারণত দীর্ঘদিন বাঁচেন। জাপানে সবচেয়ে বেশিদিন বাঁচার রেকর্ড ছিল মিয়োকো হিরোয়াসুর। তার প্রয়াণের পর থেকেই শিগেকোই হয়ে যান সেদেশের সবচেয়ে বেশি আয়ুসম্পন্ন মানুষ। ১১৪ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা তার দীর্ঘায়ুর গোপন রহস্য প্রকাশ করেছেন।
বর্তমানে জাপানের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ শিগেকো কাগাওয়ার, যার বয়স ১১৪ বছর। এই বয়সেও চলছে তার সক্রিয় জীবনধারা। তার প্রজ্ঞা ও দৈনন্দিন অভ্যাস অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।
শতবর্ষী এই নারী শুধু বয়সে প্রবীণ নন, তার শারীরিক ও মানসিক সচলতাও প্রশ্ন জাগায়। ২০২১ সালে অলিম্পিক মশাল দৌড়ে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। কী সেই গোপন সূত্র, যা তাকে এত দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন দিয়েছে? দীর্ঘায়ুর রহস্য জানতে চাইলে সাবেক এই প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ জানালেন—সক্রিয় ও স্বাধীন জীবনযাপনই তার শক্তি।
৮৬ বছর বয়স পর্যন্ত চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন শিগেকো। তখন পরিবহন সুবিধা সীমিত ছিল, তাই হেঁটেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতেন। তিনি বলেন, আমি যখন চিকিৎসক ছিলাম, তখন তো এত গাড়িঘোড়া না থাকায় হেঁটেই সবখানে যেতে হতো। আর এ কারণেই হয়তো এত শক্তিশালী ও সুস্থ থাকতে পেরেছি। আমার এনার্জি আমার সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমি আগাগোড়াই যেখানে খুশি যেতাম, যা খুশি খেয়েছি, যা খুশি করেছি, স্বাধীন থেকেছি।
এক সময় অন্যের বাড়িতে কাজ করেছি, এখন আমার খামারে একশ ভেড়া। তবে এলোমেলোভাবে নয়; বরং নিয়মতান্ত্রিকভাবে জীবন কাটিয়েছেন তিনি। তার জীবনযাপনের একটা রুটিন ছিল। দিনে তিনবার নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে খাবার খেয়েছেন। ঠিক সময়ে শুতে গিয়েছেন, উঠেও পড়েছেন ঘড়ি ধরে। ফলে যা খুশি করে বেড়ালেও এক ছন্দবদ্ধ জীবন ছিল তার। আর সে কারণেই হয়তো তিনি দীর্ঘায়ু হতে পেরেছেন—এমনটাই ভাবা যেতে পারে।
শিগেকো কাগাওয়ার আগে জাপানের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ ছিলেন হিরোয়াসু। তিনিও জানিয়েছিলেন, স্বতঃস্ফূর্ত জীবনযাপন করে যাওয়াটাই তাকে দীর্ঘ জীবন দিয়েছে। মৃত্যু পর্যন্ত তিনিও কাগজ পড়েছেন, ছবি এঁকেছেন, তাস খেলেছেন। অর্থাৎ জীবনকে বেছে নিয়েছেন প্রাণভরে। আর এভাবে বেঁচে থাকাটাই হয়তো দীর্ঘ জীবন দিয়েছে তাকে। যেমন দিয়েছে শিগেকোকেও।
মন্তব্য করুন