

থাইল্যান্ডের সঙ্গে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে কম্বোডিয়া সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে। শনিবারও দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে লড়াই অব্যাহত থাকার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কম্বোডিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সীমান্ত ক্রসিংগুলো বন্ধ থাকবে। এর আগে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জানিয়েছেন— কম্বোডিয়া যদি সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের সব সেনা প্রত্যাহার না করে এবং স্থলমাইন অপসারণ না করে, তবে যুদ্ধবিরতি সম্ভব নয়।
থাই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবারের সংঘর্ষে তাদের চারজন সেনা নিহত হয়েছেন। উভয় পক্ষই বোমাবর্ষণ ও গোলাবিনিময় অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে। তবে কম্বোডিয়া তাদের সামরিক হতাহতের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেনি।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, থাই যুদ্ধবিমান হোটেল ভবন ও একটি সেতুতে বোমা হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড জানায়, কম্বোডিয়ার রকেট হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।
শনিবার নিহত চার সেনাসহ সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত থাইল্যান্ডের মোট সামরিক নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ২৭০ জন, যাদের মধ্যে ছয়জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন। কম্বোডিয়া শুক্রবার জানিয়েছিল, তাদের পক্ষে অন্তত ১১ বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৫৯ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের কারণে সীমান্তের উভয় পাশে অন্তত ৭ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শনিবার কম্বোডিয়া অভিযোগ করে জানায়, তাদের ওপর আরও থাই বিমান হামলা হয়েছে। কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানায়, ১৩ ডিসেম্বর থাই সামরিক বাহিনী দুটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে সাতটি বোমা নিক্ষেপ করেছে। পোস্টে আরও বলা হয়, থাই সামরিক বিমানগুলোর বোমাবর্ষণ এখনো বন্ধ হয়নি। থাই সেনাবাহিনীও নিশ্চিত করেছে যে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ স্থলসীমান্ত নিয়ে এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিরোধ চলছে। ১৯০৭ সালে ফরাসি মানচিত্রবিদরা এই সীমান্ত নির্ধারণ করেন, তখন কম্বোডিয়া ছিল ফ্রান্সের উপনিবেশ।
মন্তব্য করুন