

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে প্রায় এক সপ্তাহের নতুন সংঘর্ষের পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন। এর ফলে আগামী ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুক্রবার প্রকাশিত রাজকীয় ডিক্রিতে অনুতিন জানান, প্রাণঘাতী সীমান্ত উত্তেজনা ও অন্যান্য রাজনৈতিক সংকট তার সংখ্যালঘু সরকারের পক্ষে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সংসদ ভেঙে দেওয়াই যথাযথ সমাধান, যা জনগণের কাছে রাজনৈতিক ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার উপায়।
ব্যবসায়ী-রাজনীতিক অনুতিন ২০২৩ সালের আগস্টের পর থেকে থাইল্যান্ডের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী। দায়িত্ব নেওয়ার সময় তিনি জানিয়েছিলেন, জানুয়ারির শেষের মধ্যে সংসদ ভেঙে দেবেন। তবে অনাস্থা ভোটের মুখে পড়ে তিনি এর আগেই নির্বাচন আহ্বান করলেন।
গত মাসে দক্ষিণ থাইল্যান্ডে ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলায় ব্যর্থতার কারণে অনুতিন ও তার ভুমজাইথাই পার্টি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। ওই বন্যায় অন্তত ১৭৬ জনের মৃত্যু হয়।
এদিকে কম্বোডিয়ার সঙ্গে চলা সীমান্ত সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং শত সহস্র মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই উত্তেজনার মধ্যেই সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। রাজকীয় ডিক্রিতে অনুতিন লিখেছেন, সরকার জরুরি সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে, কিন্তু সংখ্যালঘু সরকারের অস্থিতিশীলতা কার্যকর প্রশাসনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশ পরিচালনায় ধারাবাহিকতা, দক্ষতা ও স্থিতিশীলতা প্রয়োজন—যা বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্ভব হচ্ছে না।
অনুতিন তরুণ ও প্রগতিশীল পিপলস পার্টির সমর্থন হারানোর পর সংসদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত এসছে। এ গোষ্ঠীটি সংসদের সবচেয়ে বড় দল। তারাই এর আগে তার সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল। পিপলস পার্টি দাবি করেছিল যে, অনুতিনকে সেনাবাহিনী প্রণীত সংবিধান সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে এবং চার মাসের মধ্যে সংসদ ভাঙতে হবে। দলটি অভিযোগ করছে, ভুমজাইথাই দল সেই চুক্তি মানেনি।
থাই গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবারই তারা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বৃহস্পতিবার তারা প্রধানমন্ত্রীকে সংসদ ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছিল, জনগণের প্রতি দায়িত্ব দেখান। পিপলস পার্টি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভোটকেন্দ্রে দেখা হবে।
গত এক বছরে থাইল্যান্ড তীব্র রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে। দুজন প্রধানমন্ত্রী আদালতের রায়ে বরখাস্ত হয়েছেন। অনুতিনের আগে পায়েতংতার্ন শিনাওয়াত্রা একটি ফাঁস হওয়া ফোনকলের মাধ্যমে কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেনকে আঙ্কেল বলে সম্বোধন ও থাই সেনাবাহিনীকে সমালোচনা করার অভিযোগে নীতিগত অনাচারের দায়ে পদচ্যুত হন।
এর আগে স্রেত্থা থাভিসিনও তার মন্ত্রিসভায় জেল খাটা এক সাবেক আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়ায় পদ হারান।
মন্তব্য করুন