

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার নতুন করে ছড়িয়ে পড়া সীমান্ত সংঘর্ষ চতুর্থ দিনে গড়িয়েছে। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। দুপক্ষই শান্তিময় পরিস্থিতি কামনার কথা বললেও কেউ পিছু হটছে না। বরং, পরিস্থিতি শান্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ফোনালাপের অপেক্ষায় রয়েছে তারা। খবর আলজাজিরার।
বৃহস্পতিবার থাই সেনাবাহিনী জানায়, ভারী লড়াইয়ের মধ্যেই তিন থাই বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নতুন করে সংঘর্ষ শুরুর পর এটাই তাদের প্রথম বেসামরিক হতাহতের ঘটনা। এছাড়া এ সপ্তাহে এখন পর্যন্ত আট থাই সেনা নিহত এবং আরও ৮০ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, কম্বোডিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেবে বুধবার পর্যন্ত সীমান্তের কম্বোডিয়া অংশে ১০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে এক নবজাতকও রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৬০ জন।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, বৃহস্পতিবার ভোরে থাই সেনাবাহিনী তাদের ভূখণ্ডে একাধিক হামলা চালিয়েছে। পারস্যাত, বন্তায়ি মিনচে এবং ওড্ডার মিনচে প্রদেশে ট্যাংক ও আর্টিলারি ব্যবহার করে আক্রমণ করা হয় বলে দাবি করেছে তারা।
এক হামলায় বন্তায়ি মিনচের প্রেই চান গ্রামে বেসামরিক মানুষের ওপর গুলি চালিয়ে থাই সেনারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ কম্বোডিয়ার।
আরেক ঘটনায় তারা জানায়, থাই বাহিনী খনার মন্দির এলাকায় গোলাবর্ষণ করেছে এবং ও’সমাছ এলাকায়ও আর্টিলারি ফায়ার চালিয়েছে।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, কম্বোডিয়া থাইল্যান্ডকে সব শত্রুতামূলক কার্যক্রম বন্ধ করতে, নিজ বাহিনীকে কম্বোডিয়ার ভূখণ্ড থেকে সরিয়ে নিতে এবং অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে ফেলে এমন আগ্রাসী কর্মকাণ্ড এড়াতে আহ্বান জানায়।
বুধবার সীমান্তের ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ বিতর্কিত অংশজুড়ে ডজনের বেশি স্থানে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। জুলাইয়ে পাঁচ দিনের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর এটাই সবচেয়ে বড় এবং প্রাণঘাতী সংঘর্ষ, যেখানে দুই দেশের বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।
পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হওয়ায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনই সীমান্ত সংঘাত না থামলে বড় যুদ্ধ ঘনিয়ে আসতে দেরি নেই।
মন্তব্য করুন