ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য বরাদ্দ ২০ হাজার অ্যান্টি-ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও তা ইউক্রেনে না পাঠিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
রোববার (০৮ জুন) মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল এবিসি নিউজের ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি জানান, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মূলত ইরানি নকশায় তৈরি শাহেদ ড্রোন প্রতিরোধে ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
তিনি বলেন, আমরা এই ২০ হাজার অ্যান্টি-শাহেদ ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর নির্ভর করেছিলাম। এগুলো খুব ব্যয়বহুল নয়, তবে এতে বিশেষ প্রযুক্তি রয়েছে যা আমাদের জন্য খুবই কার্যকর।
এই বিষয়ে সোমবার (০৯ জুন) প্রকাশিত ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এখন মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, বিশেষ করে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্থগিত হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে। তাই ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের বদলে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ সম্প্রতি এক জরুরি নির্দেশনায় এই ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই সময়ে তিনি ইউক্রেন ডিফেন্স কন্ট্যাক্ট গ্রুপের সর্বশেষ বৈঠকেও অনুপস্থিত ছিলেন- ২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর এই প্রথমবার কোনো মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রধান ওই বৈঠকে অংশ নিলেন না।
এদিকে চলতি বছরের মার্চ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া স্থগিত রেখেছে। হেগসেথ ইউরোপীয় মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানালেও, সমর্থনের ঘাটতির মধ্যে ইউক্রেন এককভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
রুশ ড্রোন হামলা প্রসঙ্গে কিয়েভ ইনডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কিয়েভে সোমবার রাতে চালানো হামলায় রেকর্ডসংখ্যক ৪৭৯টি ড্রোন এবং ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সবচেয়ে বড় রাতের হামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রাশিয়া ইতোমধ্যে নতুন করে ১২ থেকে ১৫টি ড্রোন লঞ্চ সাইট নির্মাণ করেছে এবং জেরান ড্রোনের উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ২১ থেকে বাড়িয়ে ৭০ করেছে।
জেলেনস্কি বলেন, আমরা প্রতিদিন হামলার শিকার হচ্ছি। অনেকে বুঝতে পারে না যুদ্ধবিরতির কথার আড়ালেও রাশিয়া আক্রমণ বন্ধ রাখে না।
তিনি আরও বলেন, পুতিন শান্তিতে আগ্রহী নন। তাকে থামাতে হলে কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, বিশ্ব নেতাদেরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই ক্ষমতা রয়েছে।
মন্তব্য করুন