ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে ফ্রান্স ‘অটল ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ’ বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো। তিনি বলেন, যা কিছুই হোক না কেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে যা ঘটছে তা ভুলে যাওয়া চলবে না।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ জুন) ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই মন্তব্য করেন তিনি। আনাদোলু এজেন্সির।
বারো বলেন, আমরা একটি সমষ্টিগত উদ্যোগের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যার লক্ষ্য ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের একটি রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব করে তোলা।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অব্যাহত মানবিক সংকটের প্রতি ইঙ্গিত করে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবিক সহায়তা যেন অবিলম্বে গাজায় প্রবেশ করতে পারে এবং হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়- এ দুই বিষয় আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, এই সংকটের পেছনের রাজনৈতিক বাস্তবতা থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকলে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি সম্ভব নয়।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইইউ-ইসরায়েল অ্যাসোসিয়েশন চুক্তি নিয়েও আলোচনায় বসছেন। এ বিষয়ে জঁ-নোয়েল বারো বলেন, ইইউর প্রস্তুত করা এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চুক্তির ২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ইসরায়েল মানবাধিকার রক্ষায় তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে বলে মনে হচ্ছে।
এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, চুক্তি কার্যকর থাকবে শুধুমাত্র তখনই, যখন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।
একই বৈঠকের আগে স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে মানুয়েল আলবারেস সাংবাদিকদের বলেন, ইইউ-ইসরায়েল অ্যাসোসিয়েশন চুক্তি স্থগিত করা উচিত। স্পেন ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক পদক্ষেপের ওপর জোর দিচ্ছে।
অনুষ্ঠিত ফরেন অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কায়া ক্যালাস। বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যের পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চীনের ভূরাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ফ্রান্সের মতো একটি প্রভাবশালী রাষ্ট্র যখন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেয়, তা শুধু প্রতীকী অবস্থান নয়- বরং আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। গাজা সংকট, ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকা এখনো অনেকাংশে নীতিনির্ধারণী হয়ে উঠতে পারেনি। তবে ফ্রান্স ও স্পেনের মতো দেশগুলোর অবস্থান সেই ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
মন্তব্য করুন