নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স বিমানবাহিনীর দুটি জেট বিমান নিয়ে চীন সফরে গেছেন। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে যদি একটি বিমান অচল হয়ে যায়, সেই ভয় থেকেই সঙ্গে নিয়ে যান আরেকটি বিমান।
রোববার হিপকিন্স তার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রয়্যাল নিউজিল্যান্ড এয়ার ফোর্সের বোয়িং ৭৫৭-এ চেপে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার চীনের উদ্দেশ্যে রওনা হন। চীনাদের সঙ্গে বাজার সম্প্রসারণই এ সফরের মূল উদ্দেশ্য।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে জানানো হয়, দ্বিতীয় ৭৫৭ বিমানটি ফিলিপাইনের ম্যানিলা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী হয়েছিল।
একজন প্রতিনিধি বলেন, ‘আমাদের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য অংশীদারের সঙ্গে মিলিত হওয়া এবং এ সফরের সফলতা নিয়ে আমরা ঝুঁকি নিতে চাইনি। ৭৫৭ বিমানগুলো ৩০ বছর পুরোনো। এগুলো অর্থনৈতিক জীবনের শেষ প্রান্তে অবস্থান করছে। ২০২৮ ও ২০৩০ সাল নাগাদ এগুলো বদলে ফেলার কথা রয়েছে।’
এদিকে দুই বিমান নিয়ে চীন সফরে যাওয়ার ঘটনায় চুপ থাকেনি বিরোধী দল। তাদের দাবি, দুই বিমান নিয়ে যাওয়া পরিবেশগত দিক থেকে দেশকে বিব্রত করেছে এবং দেশের করুণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কথা বিশ্বময় জানাজানি হয়ে গেছে।
প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা ক্রিস্টোফার লুক্সন গণমাধ্যমকে জানান, ‘জলবায়ুর এই জরুরি অবস্থায় আরেকটি ৩০ বছর পুরোনো বোয়িং ৭৫৭ নিয়ে যাওয়া ভালো কিছুর বার্তা দেয় না।’
লিবারেটেরিয়ান এসিটি পার্টির ডেভিড সেইমুর দাবি করেছেন, বাড়তি একটি বিমানের জন্য যে পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসৃত হয়েছে তা ‘ফোর্ড রেঞ্জার গাড়ি দিয়ে নিউজিল্যান্ডকে ৬০৬ বার অতিক্রম করার সমতুল্য।’
তিনি হাস্যরস করে বলেন, ‘কেউ যেমন ফোনের একটি চার্জার ভেঙে যাওয়ার ভয়ে আরেকটি চার্জার নিয়ে বিমানে ওঠেন; তেমনি ক্রিস হিপকিন্স তার সঙ্গে একটি বোয়িং উড়োজাহাজ নিয়ে ঘোরেন। নিউজিল্যান্ডের পুরোনো বিমানের বহর জাতীয়ভাবে বিব্রত অবস্থার সৃষ্টি করছে। ’
এর আগে জাসিন্ডা আর্ডার্ন অ্যান্টার্কটিকায় সি-১৩০ ট্রান্সপোর্ট বিমান নিয়ে আটকা পড়েন। পরে ইতালিয়ান একটি বিমানে করে বাড়ি ফিরতে হয় তাকে।
২০২২ সালে যখন আর্ডার্ন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দেখা করতে যান, তখনো তার বোয়িং বিমান ওয়াশিংটনে অকেজো হয়ে যায়। পরে তিনি একটি বাণিজ্যিক বিমানে করে দেশে ফেরেন। এদিকে সলোমন দ্বীপপুঞ্জে ৩০ জন প্রতিনিধিসহ প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিনি হেনারে আটকা পড়েছিলেন।
২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী জন কিই অস্ট্রেলিয়ার টাউন্সভিলেতে আটকা পড়েন। বিমানবাহিনী এ সময় আরেকটি বিমান নিয়ে আসলেও শেষমেশ কিইকে ভারত সফর এক দিন সংক্ষিপ্ত করতে হয়।
হিপকিন্স জানিয়েছেন, যদি যাত্রাপথে মূল বিমানটির কোনো সহায়তা লাগে, দ্বিতীয় বিমানটি অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে থাকবে।
মন্তব্য করুন