দুই বছর পেরিয়ে তিন বছরে পা দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। পশ্চিমা সামরিক আধিপত্য ঠেকানোর এ যুদ্ধে উভয়পক্ষই অন্তত এক লাখের বেশি সেনা হারিয়েছে। এরই মধ্যে সেনা সংকট মোকাবিলায় বাধ্যতামূলক সামরিক বাহিনীতে যোগদানের নীতি বেছে নিয়েছে জেলেনস্কি প্রশাসন।
রাশিয়ার মতো পরাশক্তির বিরুদ্ধে টিকে থাকতে পশ্চিমা অস্ত্র সহায়তার পাশাপাশি ন্যাটোর সেনাও মাঠে নামাতে চলছে কিয়েভ। এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ইউক্রেনে দেশটির সেনা পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানান। রাশিয়া যাতে এ যুদ্ধে জিততে না পারে তার জন্য সম্ভাব্য সকল বিকল্পের কথা হিসেবে এমন প্রস্তাব দেন পরমাণু শক্তিধর দেশটির প্রেসিডেন্ট।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীও। মাখোঁর এই বক্তব্য পশ্চিমা বা ন্যাটোর সমর্থন না করলেও রাশিয়ার দাবি, চলতি মাসেই ইউক্রেনে সৈন্য পাঠাতে পারে ফ্রান্স। রুশ বার্তা সংস্থা তাসের এক প্রতিবেদনে এমনটা জানা যায়।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা জানান এপ্রিল মাসে ফ্রান্স ইউক্রেনে দেড় হাজার সেনা পাঠাতে পারে।
তিনি জানান, ফ্রেঞ্চ ফরেন রিজিয়নের কমান্ড স্টাফরা গত মার্চের শুরুতে একটি কৌশলগত ব্যাটালিয়ন দল গঠন করেছে, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদেরকে ইউক্রেনে পাঠানো।
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনে একটি সামরিক দল পাঠানোর জন্য প্যারিসের প্রস্তুতি সম্পর্কে নতুন গোয়েন্দা তথ্য হাতে এসেছে। এই লক্ষ্যে গত মার্চের শুরুতে ফ্রেঞ্চ ফরেন রিজিয়নের কমান্ড স্টাফরা প্রায় ১৫০০ জনের সমন্বয়ে একটি ব্যাটালিয়ন কৌশলগত গ্রুপ গঠনের অনুমোদন দেয়। আর এপ্রিলে সম্পূর্ণ যুদ্ধ প্রস্তুতির সঙ্গে তাদেরকে বিমানে করে ইউক্রেনে পাঠানো হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে জানিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। যদিও এই বিষয়ে তখন পর্যন্ত একমত হয়নি বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীও সে সময় জানান, কিছু পশ্চিমা রাষ্ট্র ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির কথা বিবেচনা করছে।
যদিও প্রেসিডেন্ট মাখোঁর এমন মন্তব্যের একদিন পরই ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পরিকল্পনা অস্বীকার করে সামরিক জোট ন্যাটো।
মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটটি জানায়, ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। অন্যদিকে রাশিয়ান ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের প্রধান সের্গেই নারিশকিন দাবি করেছেন, ইউক্রেনে প্রায় ২ হাজার সৈন্য মোতায়েনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে ফ্রান্স। এমনকি ফরাসি সামরিক বাহিনীর কিছু সদস্য ইতোমধ্যেই ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
মন্তব্য করুন