ইউটিউব দেখে নিজের বাড়িতেই সন্তান প্রসবের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের কৃষ্ণগিরি জেলার কৃতিগারের স্বামী। কিন্তু সে সফল হতে পারেনি। ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে কৃতিগার (২৮) মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় সদ্যোজাতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের কৃষ্ণগিরি জেলার পোচামপল্লির পুলিয়ামপট্টি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত স্বামী কার্তিকেয়নকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরেই স্ত্রী কৃতিগার (২৮) মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিরুপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কে বুপাথি। ওই দম্পতির পরিচিত এক দম্পতিকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তবে সুস্থ আছে নবজাতক।
দেশটির পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে কৃতিগার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। ওই অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে বাড়িতেই প্রসব করান কৃতিগার স্বামী। কীভাবে সন্তান প্রসব করাতে হয়, সেসব আগে থেকেই ইউটিউবে ভিডিও দেখে এবং ইন্টারনেটে পড়াশোনা করে রপ্ত করেছিলেন কার্তিকেয়ন। সেভাবেই সন্তান প্রসবও করান। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সংজ্ঞা হারান কৃতিগা। তাড়াতাড়ি অ্যাম্বুলেন্স ডেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মা ও নবজাতককে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।
চিকিৎসকরা জানান, প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই মৃত্যু হয়েছে কৃতিগার।
কিন্তু কেন এমন করলেন কার্তিকেয়ন-কৃতিগা? জানা গেছে, পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি কার্তিকেয়ন-কৃতিগাও স্বাভাবিক প্রসবে বিশ্বাস করতেন। তাদের তিন বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তারও জন্ম হয়েছে বাড়িতেই। কৃতিগার দ্বিতীয় সন্তান গর্ভে আসার কিছু দিন আগেই মারা যান কার্তিকেয়নের মা থাঙ্গাভেলু। দম্পতির পাশাপাশি পরিবারেরও বিশ্বাস ছিল, কৃতিগার গর্ভে নবজন্ম হবে থাঙ্গাভেলুর। পাশাপাশি তারা সবাই স্বাভাবিক ও বাড়িতে প্রসবে বিশ্বাসী ছিলেন।
তদন্তকারী অফিসার জয়চন্দ্রন জানিয়েছেন, পরিবারের সবাই কৃতিগাকে বাড়িতে এবং স্বাভাবিক প্রসবের জন্য উৎসাহ দিতেন। কার্তিকেয়নদের পরিচিত স্থানীয় দম্পতি প্রভীন কুমার এবং লাবণ্যও এলাকাবাসীকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের বিরোধিতায় প্রচার চালাত এবং বাড়িতে প্রসবে প্ররোচনা দিত। ওই দম্পতিকেও আটক করা হয়েছে। সেসব কারণে গর্ভে সন্তান আসার পর থেকে একবারও কোনো চিকিৎসকের কাছে চেকআপ পর্যন্ত করাননি ওই দম্পতি।
মন্তব্য করুন