নতুন আইন পাস করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ আইনে অভিবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠাতে পাঁচ শতাংশ করারোপের কথা বলা হয়েছে। এতে করে বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন লাখ লাখ ভারতীয়। রেমিট্যান্স পাঠাতে তাদের বাড়তি কর পরিশোধ করতে হবে।
সোমবার (১৯ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বিল ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’ মার্কিন হাউস বাজেট কমিটিতে অনুমোদিত হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ভারতীয়দের জন্য অর্থ দেশে পাঠানো আরও ব্যয়বহুল করতে পারে। প্রস্তাবিত আইনের অধীনে, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অর্থ প্রেরণের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ট্যাক্স আরোপ করা হবে। এই ট্যাক্স প্রযোজ্য হবে সব আন্তর্জাতিক অর্থ স্থানান্তরে, যা মার্কিন নাগরিক নয় এমন ব্যক্তিদের (নন-ইমিগ্রান্ট ভিসা ধারক যেমন এইচ-১বি এবং গ্রিন কার্ডধারী) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
আইনটি পাস হলে, অর্থ প্রেরণের সময় সরাসরি ৫ শতাংশ অর্থ কেটে নেওয়া হবে এবং এর জন্য কোনো ছাড়ের সীমা নির্ধারিত হয়নি। অর্থাৎ, ছোট অঙ্কের স্থানান্তরেও এই ট্যাক্স প্রযোজ্য হবে। তবে এই ট্যাক্স মার্কিন নাগরিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৫ লাখ ভারতীয় প্রবাসী রয়েছেন, যার মধ্যে ৩২ লাখ ভারতীয় বংশোদ্ভূত। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত মোট ১১৮ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ২৮ শতাংশ বা ৩২ বিলিয়ন ডলার এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এই আইন কার্যকর হলে ভারতীয় প্রবাসীদের জন্য অতিরিক্ত ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ট্যাক্স প্রদানের বোঝা সৃষ্টি হবে।
ট্যাক্সটি শুধু সাধারণ রেমিট্যান্স নয়, বিনিয়োগ আয়, স্টক অপশন থেকে অর্জিত আয়সহ অন্যান্য আয় স্থানান্তরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। ফলে প্রবাসী ভারতীয়রা তাদের পরিবারকে সহায়তা করা এবং নিজ দেশে বিনিয়োগ করা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
এই প্রস্তাবিত আইনটি শুধু অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে নয়, অভিবাসী নীতিতেও বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। এতে ৪৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে মেক্সিকো সীমান্তে ট্রাম্পের দেয়াল নির্মাণ পুনরায় শুরু করতে। এর আওতায় তিন হাজার নতুন বর্ডার প্যাট্রোল এজেন্ট ও পাঁচ হাজার নতুন কাস্টমস অফিসার নিয়োগ করা হবে। এছাড়া ১০ হাজার নতুন ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) অফিসার নিয়োগের জন্য তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছে।
আইনটি আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীদের জন্যও বড় আঘাত হানবে। এতে আশ্রয়ের জন্য আবেদনকারীদের এক হাজার ডলার ফি প্রদান করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এটি একটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ, যা যুক্তরাষ্ট্রকে অস্ট্রেলিয়া এবং ইরানের মতো কয়েকটি কঠোর অভিবাসন নীতির দেশের সাথে এক সারিতে দাঁড় করাবে।
মন্তব্য করুন