ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আগামী দিনগুলোতে দেশটির সেনারা গাজায় ‘পূর্ণ শক্তি’ নিয়ে প্রবেশ করবে এবং তাদের অভিযান শেষ হবে হামাসকে পরাজিত করার মাধ্যমে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা জানান। মধ্যপ্রাচ্যর সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া নিউজ তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
নেতানিয়াহু বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে আমরা যুদ্ধ বন্ধ করব না। একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি হতে পারে, তবে আমরা সর্বাত্মকভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য হামাসকে পরাজিত করা এবং তাদের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করতে ইচ্ছুক দেশগুলোকে খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছি। আমরা এমন একটি প্রশাসন গঠন করেছি যা গাজার বাসিন্দাদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেবে। তবে, আমাদের প্রয়োজন এমন দেশগুলো, যারা তাদের গ্রহণ করতে রাজি।
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতিতে বসবাসরত প্রায় ২১ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটের মধ্যে পড়েছে। জাতিসংঘ-সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা মূল্যায়নবিষয়ক সংস্থা আইপিসি (ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন) জানিয়েছে, গাজার মানুষের মধ্যে খাদ্য সংকট ‘গুরুতর ঝুঁকিতে’ রয়েছে এবং তারা দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে পারে।
অবরোধের কারণে গাজায় ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে না পারায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠেছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের পর গাজার খাদ্য পরিস্থিতিতে ‘বড় ধরনের অবনতি’ হয়েছে। যদিও এখনো সেখানে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়নি, তবে সংকট গভীরতর হচ্ছে।
আইপিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক মাসে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে গাজায় সাময়িক স্বস্তি ফিরে এসেছিল, কিন্তু এখন দুপক্ষের মধ্যে নতুন করে বৈরিতা শুরু হওয়ায় গাজার বাসিন্দারা পুনরায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
বিশেষ করে, গত মার্চ মাস থেকে ইসরায়েল মানবিক সহায়তা প্রবেশে অব্যাহতভাবে বাধা দিচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে গাজার মানবিক সহায়তা প্রবাহের জন্য চাপ বাড়ানো হলেও, ইসরায়েলি অবরোধ অব্যাহত থাকার কারণে বিষয়টি সমাধান হচ্ছে না।
নেতানিয়াহু সরকারের পক্ষ থেকে গাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও, তা মানবিক সংকটের সমাধান করার মতো নয় বলে অনেক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা মন্তব্য করছে। বিশেষ করে গাজার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা, খাদ্য, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের মৌলিক অধিকার এখনও বিপন্ন হয়ে আছে।
মন্তব্য করুন