ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে গাজা। উপত্যকায় ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল। ফলে প্রতিনিয়ত খাদ্যসংকটে জীবন বাঁচাতে যুদ্ধ করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। বিভিন্ন সময়ে জাতিসংঘের সংস্থা ও উপত্যকার বাসিন্দারা এ ভয়াবহ খাদ্য সংকটের দাবি করে আসছিলেন। এবার এ বিষয়টি স্বীকার করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, গাজার মানুষ অনাহারে রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র এ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাবে।
শুক্রবার (১৬ মে) সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবুধাবিতে তার উপসাগরীয় সফরের শেষ দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা গাজার দিকে তাকিয়ে আছি। আমরা এটি সমাধান করব। অনেক মানুষ অনাহারে আছে। গাজায় ইসরায়েলের তীব্র বিমান হামলার মধ্যে তার এ মন্তব্য এসেছে, যা গত রাতে আরও তীব্র হয়েছে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা গত দশ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গাজায় কঠোর অবরোধ আরোপের ফলে ক্ষুধার সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে অস্বীকার করে আসছেন। ট্রাম্পের মন্তব্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনার আরও প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ট্রাম্পের সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর নিয়ে আশা করা হয়েছিল যে, এটি গাজায় যুদ্ধবিরতি বা মানবিক সহায়তার জন্য নতুন উদ্যোগ আনবে। কিন্তু গত ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি বিমান হামলায় সহিংসতা বেড়েছে এবং মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের মতে, বুধ ও বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি হামলায় ২৫০ জন নিহত হয়েছে। শুক্রবার ভোর পর্যন্ত আরও বহু হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকায় কমপক্ষে ৫৩ হাজার ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত এক লাখ ১৯ হাজার ৯১৯ জন।
উপত্যকার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেড়ে ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ আরও হাজার হাজার লোককে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর এই যুদ্ধ শুরু হয়, যেখানে প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
মন্তব্য করুন