মুজদালিফা থেকে মিনার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন হাজিরা। ইতোমধ্যে অনেকে সেখানে পৌঁছে হজের অন্যতম প্রতীকী আচার শয়তানকে প্রত্যাখ্যানে পাথর নিক্ষেপ করছেন।
শুক্রবার (৬ জুন) ভোরে লাখো হাজিকে মিনার দিকে যেতে দেখা গেছে। এর আগে রাতে হজের অন্যতম অনুষঙ্গ মুজদালিফায় অবস্থান করেন তারা। সেখানে ইবাদত ও বিশ্রামে রাত পার করেন আল্লাহর নৈকট্যপ্রত্যাশীরা।
হজের আনুষ্ঠানিকতার অন্যতম এ যাত্রায় সৌদি কর্তৃপক্ষ বেশ সতর্ক। কারণ, একত্রে লাখো হাজির গমন এবং মিনায় পাথর নিক্ষেপের স্থানে পদদলিত বা অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে। আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সার্বিক দিক বিবেচনায় ভিড় রোধ করার জন্য হাজিদের কাঠামোগত সারিতে চলাচল নিশ্চিত করা হচ্ছে। এ কাজে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় পূর্ব নির্ধারিত রুটে নিরাপত্তা কর্মী, ভিড় নিয়ন্ত্রণ ইউনিট এবং স্বেচ্ছাসেবক গাইড মোতায়েন করা হয়েছে। তারা রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে তীর্থযাত্রীদের চলতে সাহায্য করছেন। বিশেষ করে আরাফার ময়দান ও মুজদালিফায় অবস্থানের ফলে অনেক বয়স্ক শারীরিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তাদের নিরাপদে ভ্রমণ নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাসেবকরা বিশেষ নজর দিচ্ছেন।
মিনায় পৌঁছানোর পর হজযাত্রীরা জামারাত সেতুর দিকে রওনা হচ্ছেন। বহুতলা বিশিষ্ট এ স্থাপনায় লাখ লাখ হাজি একত্রে পাথর নিক্ষেপ করতে পারেন।
প্রতিজন হজযাত্রী জামারাত আল-আকাবায় সাতটি করে নুড়ি নিক্ষেপ করছেন। এর মাধ্যমে তারা শয়তানকে প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন।
মসজিদে হারামের দিক থেকে সর্বশেষ কংকর নিক্ষেপের স্থানকে ‘জামরা আকাবা’ বলা হয়। এখানে ৭টি কংকর নিক্ষেপ করতে হয়।
প্রথম দিনের সাতটি কংকর মুজদালিফা থেকে সংগ্রহ করা মুস্তাহাব। অবশ্য অন্য জায়গা থেকে নিলেও কোনো ক্ষতি নেই। তাই মুস্তাহাব পালনে অনেক হাজি মুজদালিফা থেকেই পাথর সংগ্রহ করে রওনা হয়েছেন।
১০ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্য ঢলে যাওয়া পর্যন্ত সম্ভব হলে রমী বা পাথর নিক্ষেপ করা মুস্তাহাব। তবে ১০ তারিখ সুবহে সাদিক থেকে নিয়ে ১০ তারিখ দিবাগত রাতের সুবহে সাদিক পর্যন্ত রমী করা জায়েজ।
এরপর আজ দমে শুকর বা হজের কোরবানি করবেন হাজিরা। তামাত্তু ও কিরানকারি হাজিদের জন্য একটা কোরবানি করা ওয়াজিব। জামরায়ে আকাবার রমীর পর কোরবানি করবে, মাথা মুণ্ডাবে।
১০ জিলহজ সুবহে সাদিকের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত সময়ের ভিতর কোরবানি করতে হবে। সুন্নত সময় শুরু হয় ১০ যিলহজ্ব সূর্যোদয়ের পর থেকে।
সুন্নত হলো জামরা আকাবার রমী, কোরবানি এবং মাথা কামানোর পর তাওয়াফ করা। এটিকে তাওয়াফে জিয়ারত বলে। অবশ্য আরাফায় অবস্থানের পর ১০ জিলহজ সুবহে সাদিক থেকে ১২ জিলহজের সূর্যাস্তের আগে এই তাওয়াফ করার অবকাশ রয়েছে। যদি ১২ তারিখ সূর্যাস্ত হয়ে যায় এবং তাওয়াফে জিয়ারত করা না হয় তবে দম দেওয়া জরুরি হবে।
মন্তব্য করুন