গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত বর্বরতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তেল রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল মুসলিম দেশ আজারবাইজান। কিন্তু সেই ঘোষণা যে ছিল লোক দেখানো ও প্রতারণাপূর্ণ, তা ফাঁস করে দিয়েছে ইসরায়েলের প্রভাবশালী দৈনিক হারেৎজ।
সংবাদমাধ্যমটির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তুরস্কের চাপের মুখে ২০২৩ সালের শেষ দিকে আজারবাইজান ইসরায়েলে তেল বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেয়। এরপর দেশটির কাস্টমস ডাটাবেজ থেকে ইসরায়েলে তেল রপ্তানির সব তথ্য মুছে ফেলা হয়। তবে বাস্তবে তেল সরবরাহ কোনোদিনই বন্ধ হয়নি।
হারেৎজ জানায়, তেল সরবরাহের জন্য আজারবাইজান এখন ‘তৃতীয় দেশের’ পরিচয় ব্যবহার করছে। ইসরায়েলে পৌঁছাতে এসব তেল ব্যবহার করছে তুরস্কের ভেতর দিয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক পাইপলাইন। যদিও কাগজে-কলমে এই তেলের গন্তব্য অন্য কোথাও দেখানো হচ্ছে।
একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা হারেৎজকে জানান, আমরা আজারবাইজানিদের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছি, জ্বালানি ও কৌশলগত সম্পর্ক পূর্বের মতোই অব্যাহত থাকবে। চিন্তার কিছু নেই।
২০২৩ সালের মে মাসে গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতা ও ত্রাণবাহী তুর্কি উড়োজাহাজকে গন্তব্যে না পৌঁছাতে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছিল তুরস্ক।
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান তখন সরব ছিলেন এ সিদ্ধান্তে। তবে বিরোধী দলগুলোর দাবি, আজারবাইজানের তেল বহনকারী পাইপলাইন এখনো তুরস্কের ভেতর দিয়েই ইসরায়েলে যাচ্ছে, যা এরদোয়ানের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
ইস্তাম্বুলে আজারবাইজানের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল কোম্পানি এসওসিএআর-এর অফিসের সামনে তীব্র বিক্ষোভ করেছে সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভকারীরা বলেন, মুসলিম পরিচয় নিয়ে দখলদারদের সঙ্গে ব্যবসা করা শুধু ভণ্ডামি নয়, এটি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
হারেৎজের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ইসরায়েলের আমদানি করা মোট তেলের ৩০ শতাংশই এসেছে আজারবাইজান থেকে। এই নির্ভরতা এখনো গোপনে বজায় রয়েছে। যদিও ইসরায়েল সরকার বলছে, আজারবাইজান তেল সরবরাহ বন্ধ করলেও তারা বিকল্প উৎস খুঁজে নেবে।
মন্তব্য করুন