ইরানের হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আলজাজিরা ও রয়টার্সের।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, মার্কিন ও রুশ নেতৃত্ব ইরানের ধ্বংসাত্মক হুমকির বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের অধিকারকে স্বীকৃতি ও গুরুত্ব দিয়েছে।
এর আগে ইরান তাদের পারমাণবিক স্থাপনাসহ বিভিন্ন ঘাঁটিতে চালানো ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) ভোররাতে রাজধানী তেহরান ও নাতাঞ্জ শহরে এ হামলা চালানো হয় বলে জানা গেছে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের মুখপাত্র আবুল ফজল শেখারচি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, জায়নবাদীদের এই হামলা বিনাদণ্ডে থাকবে না। তিনি বলেন, ইরান এর উপযুক্ত ও কঠোর জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে এবং এর মূল্য দিতে হবে ইসরায়েলকে। এর আগে ২০২১ সালের এপ্রিলে একই স্থাপনায় সাইবার হামলা চালিয়েছে বলেও দাবি করেছে ইরান।
একই সঙ্গে, ইরানে নিরাপত্তা বাহিনীর এক সূত্র রয়টার্সকে বলেছে যে, ইসরায়েলের হামলার জবাব কঠোর ও সুদূরপ্রসারিত হতে পারে। প্রতিশোধের ধরন ও মাত্রা সম্পর্কে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে আলোচনা চলছে বলেও জানা গেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, রাজধানী তেহরানে ইসলামিক বিপ্লব গার্ডের (রেভল্যুশনারি গার্ড) সদর দপ্তরেও হামলা হয়েছে। হামলায় বিপ্লবী গার্ডের প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিসহ ২৫ বছর ধরে দেশটির পারমাণবিক শক্তিবিষয়ক সংস্থার নেতৃত্ব দেওয়া ফারেদুন আব্বাসিও নিহত হয়েছিলেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন যে, তার দেশ তেহরান থেকে প্রায় ২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে নাতাঞ্জে অবস্থিত ইরানের প্রধান পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। সে হামলায় বিশেষ করে সেসব বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য রাখা হয়েছে যারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে কাজ করছিলেন। নেতানিয়াহু আরও বলেন, যত দিন পর্যন্ত হুমকির অবসান না হয়, হামলা চলতে থাকবে।
আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীর উত্তর-পূর্ব দিকে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। তবে এর ফলাফলে কি ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলোর ভাষ্যে, রাজধানীর আশপাশে অন্তত ৬-৯টি বিস্ফোরণের শব্দ হয়েছে এবং আবাসিক এলাকা পর্যন্ত হামলা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
স্থানীয় সংবাদ সংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, হামলার পর রাজধানীর ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও স্পষ্ট করেছেন যে, ওয়াশিংটন এই হামলায় জড়িত ছিল না। ওয়াশিংটন বলেছে যে, তাদের অগ্রাধিকার হলো মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখা।
মন্তব্য করুন