ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর হরমুজ প্রণালি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ উদ্বেগে বেড়ে গেছে অপরিশোধিত তেলের দাম। কিন্তু ঘটনার দ্বিতীয় দিনেও হরমুজ প্রণালি দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক তেল বাণিজ্যসহ অন্যান্য পরিবহন অব্যাহত রয়েছে। তবে সামুদ্রিক জাহাজ চলাচল বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হরমুজ প্রণালি কার্যত বন্ধ না হলেও জাহাজ মালিকদের গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ধীরগতির ঝুঁকি তৈরি করবে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি এ রুথে চলাচলকারী বিভিন্ন সংস্থা, ইরানি সূত্রের কাছ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছে।
বৃহত্তম আন্তর্জাতিক শিপিং সমিতিগুলোর একটি বাল্টিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম কাউন্সিলের প্রধান নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা জ্যাকব লারসেনের মতে, পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। তিনি বলেন, বিমকো এমন খবর পাচ্ছে যে আরও জাহাজ মালিকরা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন এবং লোহিত সাগর এবং পারস্য উপসাগর থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
এই উত্তেজনা কেবল বাড়ছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৩ জুন) গভীর রাতে ইরান ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইরান জানিয়েছে, এই সপ্তাহে নির্ধারিত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ষষ্ঠ দফা পারমাণবিক আলোচনায় অংশ নিচ্ছে না তারা।
হরমুজ প্রণালি ৩৫ থেকে ৬০ মাইল (৫৫ থেকে ৯৫ কিলোমিটার) প্রশস্ত এবং পারস্য উপসাগর এবং আরব সাগরকে সংযুক্ত করেছে। এ রুট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল এবং তেল পণ্য পরিবহন করে বিশ্ব শিপিং সংস্থাগুলো। যা বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ।
মেরিনট্রাফিকের পোস্ট অনুসারে, ইরান এই প্রণালিটি বন্ধ না করার অনেক কারণ থাকতে পারে। এর একটি হলো এই বছর এখন পর্যন্ত সমুদ্রপথে বাণিজ্য করা সমস্ত তেলের ৩৪ শতাংশ এ পথে গেছে। প্রণালিটি সর্বশেষ কার্যকরভাবে ১৯৮৪ সালে ইরান-ইরাক ‘ট্যাংকার যুদ্ধ’-এর সময় বন্ধ হয়েছিল। এরপর থেকে নানা হুমকি সত্বেও প্রণালিটি সচল। বিশ্বব্যাপী তেল ও গ্যাস সরবরাহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে রয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, অপারেশন ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ শুরু করে ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। শুক্রবার রাতে শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান, যা সরাসরি আঘাত হানে তেল আবিব ও আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ও স্থাপনায়। খবর তাসনিম নিউজ এজেন্সির
প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাজধানী তেল আবিবের অনেক এলাকা হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘরবাড়িতে ও স্থাপনায় আঘাত লেগেছে।
ইরান বলেছে, অপরেশনটি ছিল ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইসরায়েলি হামলার পাল্টাজবাব। শুক্রবার গভীর রাতে ইসরায়েল আবাসিক এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালালে অপারেশন ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ শুরু করে ইসলামী বিপ্লব গার্ড ও সেনাবাহিনী। শনিবারও ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
মন্তব্য করুন