সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৯ পিএম
আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৫, ০৭:২৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এবার লাক্ষাদ্বীপে সেনাঘাঁটি গড়ছে ভারত

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

দক্ষিণ ভারতের কেরালা উপকূলসংলগ্ন আরব সাগরের বুকে ছড়িয়ে থাকা ৩৬টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত লাক্ষাদ্বীপ দ্বীপপুঞ্জ। এ দ্বীপপুঞ্জেরই উত্তর-পশ্চিমের দ্বীপ বিত্রায় এবার প্রতিরক্ষা ঘাঁটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ভারত সরকার। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির রাজস্ব দপ্তর সম্প্রতি (১১ জুলাই) এক সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, দ্বীপটি প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত কাজে ব্যবহারের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেওয়া হবে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকনমিক টাইমস জানিয়েছে, বিত্রা দ্বীপে বর্তমানে ১০৫টি পরিবার বসবাস করে। দ্বীপটি স্থানীয়ভাবে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। এই দ্বীপকে কেন্দ্র করেই নয়াদিল্লি এখন জাতীয় নিরাপত্তা ও সামুদ্রিক কৌশলগত গুরুত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে।

লাক্ষাদ্বীপের ভৌগোলিক অবস্থান বরাবরই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আরব সাগরের বুকে অবস্থানরত এই দ্বীপপুঞ্জের আশপাশ দিয়ে অনেক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজের চলাচল। এখান থেকেই সামুদ্রিক ট্র্যাফিকের উপর নজরদারি চালানো যায়। পাশাপাশি, লাক্ষাদ্বীপ নৌ-অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।

খবরে বলা হয়, পটি থেকে আকাশপথে পাকিস্তানের করাচি শহরের দূরত্ব মাত্র ১,০০০ কিলোমিটার (যদিও সমুদ্রপথে দূরত্ব দ্বিগুণ)। মাঝখানে শুধুই জলরাশির বিস্তৃতি, যা এই দ্বীপের কৌশলগত তাৎপর্য আরও বাড়িয়ে তোলে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মালদ্বীপের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক এবং বেইজিংয়ের নজরদারি রুখতেই লাক্ষাদ্বীপে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করতে চাইছে ভারত। ভারতের দক্ষিণ উপকূলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিত্রায় প্রতিরক্ষা ঘাঁটি স্থাপন এক বড় কৌশলগত পদক্ষেপ বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

তবে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক ও জনসাধারণের বিরোধিতা। লাক্ষাদ্বীপের কংগ্রেস সংসদ সদস্য হামদুল্লাহ সাইদ এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিত্রার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ধ্বংস করার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আমি বিত্রার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের পাশে থাকব, রাজনৈতিক এবং আইনি সব ধরনের লড়াই চালিয়ে যাব।’

তার অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের মতামত নেওয়া তো দূরের কথা, কোনো আলোচনা ছাড়াই কেন্দ্র এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে। তাদের জন্য কোনো বিকল্প বা ক্ষতিপূরণও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের শুরুতে ভারত-মালদ্বীপ কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। মালদ্বীপের কিছু নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ভারতের পর্যটকরা সে দেশকে বয়কটের ডাক দেয়। সেই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লাক্ষাদ্বীপ সফরে যান এবং লাক্ষাদ্বীপকে বিকল্প পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরা হয়। এর মাধ্যমে দ্বীপটির কৌশলগত গুরুত্ব নতুন করে আলোচনায় আসে।

সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কেও ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে পশ্চিম দিকের সমুদ্র সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে নয়াদিল্লি। আর সেই প্রয়োজনে লাক্ষাদ্বীপের বিত্রা দ্বীপে প্রতিরক্ষা ঘাঁটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা এখন দ্রুত বাস্তবায়নের পথে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে : মিডিয়া সেল 

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নারীর মর্যাদা সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন হবে : এসএম জাহাঙ্গীর

অ্যানফিল্ডে এক দশকের অভিশাপ ভাঙল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

রূপনগরে আগুন / ডিএনএ শনাক্তের পর ১৬ মরদেহ পেলেন স্বজনেরা

জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদ হত্যার ঘটনায় তার ছাত্রী আটক 

সুন্দরবনের সম্পদ রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে : বাসস চেয়ারম্যান

রোমাঞ্চকর জয়ে ভারতকে হারিয়ে সেমিতে ইংল্যান্ড

বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক

‘আগুন লাগার ঘটনা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে’

কিডনি রোগীদের জন্য যে ১০ খাবার নিষেধ

১০

গাজায় আবারও ইসরায়েলের বিমান হামলা 

১১

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১২

আ.লীগের কেন্দ্রীয় ১ নেতা গ্রেপ্তার

১৩

হোটেলে নাশতা খেয়ে শিশুসহ ৬ জন অজ্ঞান

১৪

তাঁতিবাজারে জবি শিক্ষার্থীদের অবরোধ

১৫

তিন ধর্মের উপাসনাস্থল নির্মিত হচ্ছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে

১৬

সীমান্তে ১২ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

১৭

রাজধানীতে ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৮

বিএনপি ক্ষমতায় এলে সব দুঃশাসনের কবর দেওয়া হবে : জুয়েল

১৯

সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো ষড়যন্ত্রের অংশ : সারজিস

২০
X