ইরান সর্বশেষ হামলায় ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে প্রায় ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার ভোরে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েল অভিমুখে ছোড়া হয়। ইসরায়েলি হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে শনিবার (১৪ জুন) ইসরায়েলের লক্ষ্যে প্রথম মিসাইল ছোড়ে ইরান।
মঙ্গলবার বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের একজন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। তবে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের প্রতিরক্ষা বলয়ের বাইরে খোলা এলাকায় পড়েছে।’
এদিকে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের হার্জেলিয়ার গোয়েন্দা ভবন, মোসাদ এবং আমান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সদরদপ্তর লক্ষ্য করে সফল হামলা চালিয়েছে। মোসাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত কেন্দ্রে এখন আগুন জ্বলছে।
ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড আরও বলছে, নির্ভুল হামলাগুলো তাদের চলমান অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩ এর অংশ। এই পাল্টা হামলার লক্ষ্য ইরানের শহর এবং অবকাঠামোতে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার প্রতিশোধ হিসেবে দখলদারিত্বকে ‘সুনির্দিষ্ট এবং বেদনাদায়ক আঘাত’ প্রদান করা।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, তেলআবিব মহানগর এলাকায় কমপক্ষে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে, যার মধ্যে একটি হার্জলিয়ায় পড়েছে বলে জানা গেছে। এটি উপকূলীয় শহর যেখানে ইসরায়েলি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সদরদপ্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রয়েছে।
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের পর এই উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়, যেখানে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একাধিক হামলা চালায়।
২০২৪ সালের এপ্রিলে ইরান সরাসরি ইসরায়েল লক্ষ্য করে ৩০০টিরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যা ছিল দুই দেশের মধ্যে প্রথম সরাসরি সামরিক সংঘর্ষ। যদিও সেই সময়েও ইসরায়েল ও মিত্র দেশগুলো অধিকাংশ আক্রমণ প্রতিহত করে, তবে এই ঘটনার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, চলমান এই সংঘর্ষে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এবং তা একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সংঘর্ষ কমানোর আহ্বান জানালেও, এখন পর্যন্ত উভয় দেশই আক্রমণাত্মক অবস্থানে রয়েছে।
মন্তব্য করুন