মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে থাকলেও ইরান এখনো কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।
স্থানীয় সময় শনিবার (২১ জুন) এক বিবৃতিতে তিনি এ তথ্য জানান বলে জর্ডানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়া নিউজ তাদের এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে আরাগচি বলেন, ইরান এখনো ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির (জেসিপিওএ) মতো আলোচনার পথ খোলা রাখতে চায়। তবে এই প্রক্রিয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসরায়েল, যারা প্রকাশ্যেই কূটনৈতিক সমাধানের বিরোধিতা করছে।
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা কূটনীতিকে শক্তি হিসেবে দেখি, সংকট নয়। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার যে সমঝোতা আমরা ২০১৫ সালে করেছিলাম, সে পথেই আমরা আবারও ফিরে যেতে প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু ইসরায়েল প্রকাশ্যে কূটনৈতিক সমাধানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা যুদ্ধ চায়, দখল চায়, আক্রমণ চায়- শান্তির কোনো সুযোগকেই তারা মূল্য দিচ্ছে না।
২০১৫ সালের ঐতিহাসিক চুক্তি, জেসিপিওএ অনুযায়ী ইরান তার পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করেছিল এবং এর বদলে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল। তবে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর থেকেই ইরান ও পশ্চিমাদের মধ্যে টানাপোড়েন বাড়তে থাকে।
এখন যখন ইরান পুনরায় আলোচনায় বসতে আগ্রহ প্রকাশ করছে, তখন ইসরায়েলের অবস্থান আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। গত সপ্তাহে ইসরায়েল ইরানের ভেতরে একাধিক সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, যার জবাবে ইরানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ইরানের কূটনৈতিক অবস্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে- বিশেষ করে তখন, যখন ইসরায়েল নিজেই অঞ্চলজুড়ে সামরিক আগ্রাসনের মাধ্যমে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে।
আরাগচির মন্তব্য তুলে ধরে আন্তর্জাতিক মহলে এই প্রশ্ন আরও জোরালোভাবে উঠছে। সত্যিকার অর্থে শান্তি চায় কে, আর সংঘাতকে জিইয়ে রাখতে চায় কে?
মন্তব্য করুন