ইরানের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের রাস্তায় নেমেছেন হাজারো মানুষ। শনিবার (২১ জুন) পার্লামেন্ট স্কয়ারে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভে অংশ নিয়ে তারা ইরান ও গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ইসরায়েলকে দেওয়া সামরিক সহযোগিতা বন্ধ করে।
তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদলু এজেন্সির প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিন, ইরান ও লেবাননের পতাকা হাতে, ‘ইরানে বোমাবর্ষণ বন্ধ করো’, ‘গাজায় হামলা থামাও’, ‘ইসরায়েলকে অস্ত্র দিও না’ এবং ‘ফিলিস্তিন হোক স্বাধীন’ ইত্যাদি স্লোগানে শহরের কেন্দ্রস্থল মুখর করে তোলেন।
বিক্ষোভকারীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘ইরানে হামলা চলবে না’—যা সরাসরি শুক্রবার ইসরায়েল পরিচালিত হামলার প্রতি প্রতিক্রিয়া। ওই হামলায় ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাগুলো লক্ষ্যবস্তু করা হয়। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি দূতের ভাষ্যমতে, এতে অন্তত ৭৮ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরাও রয়েছেন।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ইসরায়েলের অভ্যন্তরে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩ জন নিহত এবং ১৭০ জনের বেশি আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে, জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
লন্ডনের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষ শুধু যুদ্ধ বিরোধিতাই করেননি, তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার দাবি তুলেছেন। তাদের মতে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে একের পর এক হামলা চালিয়ে নিরীহ মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে।
আয়োজকদের ভাষ্য, এই সংঘাতের অবসান একমাত্র সম্ভব কূটনৈতিক পন্থায়। যুদ্ধ নয়, দরকার আলোচনার টেবিলে ফেরা। যুক্তরাজ্য সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে হবে এবং ইসরায়েলের প্রতি সব ধরনের সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। যদি সময়মতো কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ না করা হয়, তাহলে এই সংঘাত দ্রুতই একটি বড় আকারের যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে, যার প্রভাব শুধু ওই অঞ্চল নয়, গোটা বিশ্বেই পড়বে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত দ্রুত হস্তক্ষেপ করে উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নেওয়া।
মন্তব্য করুন