দীর্ঘ ৭ বছরের অচলায়তন ভেঙে চলতি বছরের মার্চে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোড়া দেয় সৌদি-ইরান। এরপর ধাপে ধাপে সম্পর্ক উন্নয়ন করে যাচ্ছিল উপসাগরীয় দেশ দুটি। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ এই দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে নতুন টানাপোড়েন শুরু হয়ে গেছে। যার মূলে রয়েছে মার্কিন হামলায় নিহত ইরানি জেনারেল কাসেম সুলেইমানির একটি আবক্ষ মূর্তি।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, সোমবার এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লীগের একটি ম্যাচে মাঠে নামার কথা ছিল সৌদি আরবের ক্লাব ইত্তেহাদ ও ইরানের সেপাহান এফসির। ইরানের নাগাশ-ই জাহান স্টেডিয়ামে ম্যাচটি গড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু মাঠের প্রবেশপথে রাখা হয়েছিল ইরানি জেনারেল কাসেম সুলেইমানির একটি আবক্ষ মূর্তি, যা ক্ষুব্ধ করে সৌদি ক্লাবটিকে। এর জেরে মাঠে নামবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় সৌদির ক্লবটি। ফলে, ম্যাচটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিতে হয় আয়োজকদের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এমন সময় ম্যাচটি স্থগিত করা হলো, যখন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মেরামতে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিল রিয়াদ-তেহরান। তবে, এ ঘটনা নিয়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি সৌদি-ইরান। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের এ ধরনের কর্মকাণ্ড সৌদি আরবকে ক্ষুব্ধ করবে।
চলতি বছরের মার্চে চীনের মধ্যস্থতায় তিক্ত ভুলে গিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ার প্রতিশ্রুতি দেয় মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ সৌদি-ইরান। এর আগে, সাপে-নেউলে সম্পর্কের কারণে দেশটির মধ্যকার জাতীয় ও ক্লাব পর্যায়ের ম্যাচগুলো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হতো।
গেল মাসে দীর্ঘ অচলায়তন ভেঙে সৌদি ও ইরানের ফুটবল দল ও ক্লাবগুলো একে অন্যের মাঠে খেলার ঐতিহাসিক এক চুক্তি করে। যার অধীনে গেল ১৯ সেপ্টেম্বর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ক্লাব আল নাসের তেহরানে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলে। এর আগে, ২০১৬ সালে সবশেষে ইরানের মাটিতে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলেছিল সৌদির একটি ক্লাব।
সোমবারের মূর্তিকাণ্ডের পর বিষয়টি নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে- এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন-এফসি। যেখানে বলা হয়, খেলোয়াড়, দর্শক ও ম্যাচসংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তা দিতে প্রতিশ্রুতিব্ধ তারা। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবে তারা।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত হন ইরানের অভিজাত কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সুলেইমানি। যিনি দেশের বাইরে ইরানের প্রভাব বাড়াতে বিভিন্ন অভিযানের নেতৃত্ব দিতেন। ইরানিদের চোখে সুলেইমানি ছিলেন মহানায়ক। তবে, নিহত ওই জেনারেলকে সন্ত্রাসী হিসেবেই দেখত যুক্তরাষ্ট্র ও তার আঞ্চলিক মিত্র সৌদি আরব।
মন্তব্য করুন