কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৩, ০২:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কতটা পোক্ত হচ্ছে ইরান-সৌদির নতুন সখ্য?

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (বাঁয়ে) ও ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ছবি : সংগৃহীত
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (বাঁয়ে) ও ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ছবি : সংগৃহীত

যে দুই দেশের রেষারেষি গত চার দশক মধ্যপ্রাচ্যকে বিপর্যস্ত করেছে, সেই ইরান আর সৌদি আরব যেভাবে দ্রুত ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে অবাক হওয়ার মতো।

২০১৬ সালে এক শিয়া ধর্মীয় নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সৌদি আরব, যা ইরানের অভ্যন্তরে ক্ষোভের জন্ম দেয়। বিক্ষুব্ধ লোকজন তেহরানে অবস্থিত রিয়াদের দূতাবাসে হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনার পর ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি।

সাত বছর পর মঙ্গলবার রিয়াদে খুলেছে ইরানের দূতাবাস। ধারণা করা হচ্ছে, খুব দ্রুত তেহরানেও খুলবে সৌদি দূতাবাস। এ দুই দেশের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে বাণিজ্যিক কার্যক্রম; যাত্রীবাহী বিমান চলাচলও শুরু হচ্ছে।

তবে সৌদি আরব আর ইরানের মধ্যে সখ্য কত দিন টিকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই সন্দেহের মূলে রয়েছে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েনের দীর্ঘ ইতিহাস, যা পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে কমবেশি বিপর্যস্ত করেছে। মূলত মধ্যপ্রাচ্যে নেতৃত্ব নিয়ে শিয়া ইরান এবং সুন্নি সৌদি আরবের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলে আসছে দশকের পর দশক ধরে।

সৌদিদের বরাবরই ইরান ভীতি রয়েছে। বলা হয়, ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত শিয়া হুতি মিলিশিয়াদের বিদ্রোহ দমনে সরাসরি যুদ্ধে জড়ায় সৌদি আরব। লেবাননে ইরান সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়া হিজবুল্লার প্রভাব খর্ব করতে সেদেশের সুন্নি গোষ্ঠীগুলোকে টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করতে শুরু করে সৌদিরা।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বাশার আল আসাদ সরকারের সমর্থনে ইরান অস্ত্র আর যোদ্ধা পাঠাতে শুরু করলে সৌদিরাও আসাদবিরোধীদের সাহায্য করতে শুরু করে। এতেই মধ্যপ্রাচ্যের দুই পরাশক্তির দেশের মধ্যে রেষারেষি কতটা গভীর, তা স্পষ্ট হয়। ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা আগেও একাধিকবার হয়েছে, কিন্তু টেকেনি। কারণ বৈরিতা আর সন্দেহ এতই গভীর যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে তা সহজেই দূর হবে না।

বলা হচ্ছে, সৌদি তেলের ওপর আমেরিকার নির্ভরতা কমার সঙ্গে সঙ্গে রিয়াদ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে গেল কয়েক বছর ধরেই ক্রমাগত দূরত্ব বাড়ছে। সৌদিদের তীব্র আপত্তি উপেক্ষা করে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করেন বারাক ওবামা। ২০১৯ সালে সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় তেলের স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পেছনে ইরানের হাত থাকার প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র কিছুই করেনি। এমনকি খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়েও শুরু হয় টানাপোড়েন।

তাই অনেক বিশ্লেষকের ধারণা, এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা থেকে কিছুটা বাধ্য হয়েই চিরশত্রু ইরানের সঙ্গে বোঝাপড়া করছে সৌদি আরব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফ্যামিলি মেডিসিনের পথপ্রদর্শক প্রাভা হেলথের ৮ বছর পূর্তি উদযাপন

কক্সবাজারে বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে আইনজীবীসহ নিহত ২

কেজিএফ নয়, আয়ের রেকর্ড তৈরি করেছিল অন্য এক সিনেমা

ভ্রান্ত তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না : ধর্ম উপদেষ্টা

এবার নিজ জেলায় ফজলুর রহমানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

চাকসুর তফসিল ঘোষণার সময় জানাল প্রশাসন

ফজলুর রহমানকে নিয়ে ৯৭ সংগঠনের যৌথ বিবৃতি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া বিপ্লব হবে অপূর্ণ : ডা. তাহের

স্মরণসভায় সাংবাদিকরা / গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনো আপস করেননি আবদুস শহিদ

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ৬ সেপ্টেম্বর

১০

নেইমারের জন্য আবার দুঃসংবাদ

১১

পাচারের সময় সীমান্তে অস্ত্র উদ্ধার

১২

যেভাবে বুঝবেন আপনার শরীরে কোলেস্টেরল বাড়ছে

১৩

‘রিট করার মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনকে বানচালের পাঁয়তারা চালাচ্ছে শিবির’

১৪

কুমিল্লায় একই পরিবারের চারজন নিহতের ঘটনায় সেই বাসটি জব্দ

১৫

অভিনেত্রীর বাড়ি থেকে কোটি টাকার গহনা উধাও

১৬

বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণে আরও সময় প্রয়োজন : ডিসিসিআই সভাপতি

১৭

‘অলৌকিকভাবে’ ঘরবাড়িতে ধরছে আগুন, আতঙ্কে গ্রামবাসী

১৮

দুবাইয়ে ওমান প্রবাসীর হাতে বাংলাদেশি যুবক খুন

১৯

ঢাবিতে ফজলুর রহমানের কুশপুত্তলিকা দাহ

২০
X