চলমান সংকটের শুরু থেকেই ইরান-ইসরায়েল পরস্পরকে বুঝে উঠতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে সংকট আরও গভীর হয়েছে। এমন দাবি করা হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে। দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে হামলা চালিয়ে আইআরজিসির ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজা জায়েদিসহ আরও দুই শীর্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেলকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার পর তেল আবিব ভেবেছিল তেহরান শুধু চরম ক্ষোভ প্রকাশ করবে, তবে কোনো শক্ত জবাব দেবে না।
অন্যদিকে, ইরান এ হামলার পরই জানায়- দামেস্কে তাদের দূতাবাসে হামলার বিষয়টিকে তারা নিজ দেশের ওপর হামলা হিসেবে বিবেচনা করছে। ইসরায়েলের দাবি দূতাবাস চত্বরটি কূটনৈতিক কনভেনশন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল না। ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলশনারি গার্ডের সদস্যরা সেটিকে একটি সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেছিল।
ইসরায়েলের এমন বক্তব্য ইরান মেনে নেয়নি। তেহরান ভেবেছিল ইসরায়েলি ভূখণ্ডে সরাসরি হামলার পর তেল আবিব একটি সীমারেখা টানবে। এটি ছিল ইরানের দিক থেকে আরেকটি ভুল হিসাব-নিকাশ।
এদিকে, ইস্ফাহানে হামলার জবাবে ইরান যদি পাল্টা হামলা না চালায় তাহলে এখনকার উত্তেজনা আপাতত প্রশমন হবে। বৃহস্পতিবার রাতে ইরানে যে হামলা চালানো হয়েছে সেটি পশ্চিমা মিত্রদের অসন্তুষ্ট না করে ইরানি হামলার জবাব দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর একটি সহজ চেষ্টা বলা যেতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠে- ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় যেসব সাবেক জেনারেল আছেন তারা কি এই জবাব দেওয়াকে যথেষ্ট মনে করবেন? পাশাপাশি নেতানিয়াহুর উগ্র জাতীয়তাবাদী জোটসঙ্গীরাও আরও ভয়ঙ্কর জবাব দেবার দাবি করেছেন। ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইটামার বেন গাভির বলেন, ইরানের হামলার বিপরীতে ইসরায়েলের আরও ধ্বংসাত্মক জবাব দেওয়া উচিত ছিল।
পশ্চিমা দেশগুলো মনে করে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে একটি সীমারেখা টানাই এখন মধ্যপ্রাচ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো সমাধান। যদি এই ঘটনার মাধ্যমে যদি চলমান সংকটের শেষ হয়, তাহলে এর মাধ্যমে নতুন উদাহরণ সৃষ্টি হবে। তবে এসব ঘটনায় যেটা স্পষ্ট হয়েছে সেটি হলো- ইরান ও ইসরায়েল পরস্পরের প্রতি অতিমাত্রায় মনোযোগী হলে পরস্পরের উদ্দেশ্য বা ইচ্ছা বোঝার ক্ষেত্রে কেউই দক্ষ নয়।
মন্তব্য করুন