কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৩৫ পিএম
আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সাংবাদিকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার, পাকিস্তানজুড়ে তোলপাড়

সাংবাদিক খাওয়ার হুসাইন। ছবি : সংগৃহীত
সাংবাদিক খাওয়ার হুসাইন। ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধু প্রদেশে এক তরুণ সাংবাদিকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। নিহত সাংবাদিকের নাম খাওয়ার হুসাইন। শনিবার (১৬ আগস্ট) গভীর রাতে সাঙ্গর শহরের হায়দরাবাদ রোডের একটি রেস্টুরেন্টের সামনে তার গাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মাথায় গুলির চিহ্ন থাকায় তার মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে।

স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাড়ির ভেতরে চালকের আসনে হুসাইনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার কাছ থেকে একটি পিস্তল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এটি আত্মহত্যা, নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সাঙ্গর জেলার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (এসএসপি) আবিদ বালোচ জানান, প্রমাণ সংগ্রহ ও ফরেনসিক বিশ্লেষণের কাজ চলছে। তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত মৃত্যুর কারণ উদঘাটিত হবে।

মাত্র কয়েক বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হুসাইন করাচিভিত্তিক শীর্ষ সংবাদমাধ্যম ডন নিউজে কাজ করছিলেন। তার আকস্মিক মৃত্যু পাকিস্তানজুড়ে সাংবাদিক মহলসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা।

ঘটনার পর সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সাইয়দ মুরাদ আলি শাহ তাৎক্ষণিকভাবে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাদেশিক পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজি) এই মামলার জন্য সর্বোচ্চ দক্ষ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুরাদ আলি শাহ স্পষ্ট করে বলেন, “সাংবাদিক খাওয়ার হুসাইনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অবশ্যই নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে।”

পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি গভীর শোক প্রকাশ করে হুসাইনকে একজন “নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল পেশাজীবী” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেন। একইভাবে সিন্দের গভর্নর কামরান তেসোরিও হুসাইনের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে একে “সাংবাদিকতা ও সমাজের জন্য এক বড় ট্র্যাজেডি” হিসেবে উল্লেখ করেন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

সাংবাদিক সমাজেও এ ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন ফেলেছে। কারাচি প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফাজিল জামিলি, সাধারণ সম্পাদক সোহেল আফজাল খানসহ নির্বাহী পরিষদ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, এই মৃত্যু সংবাদ গোটা সাংবাদিক সমাজকে “গভীর শোক ও আঘাতের মধ্যে” ফেলেছে। তারা সিন্ধু সরকারকে দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে সাংবাদিক নিরাপত্তা দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্নবিদ্ধ। গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ সংস্থা ফ্রিডম নেটওয়ার্ক–এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে শুধু সিন্ধু প্রদেশেই সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ১৮৪টি, যার মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন সাংবাদিক।

মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের মতে, পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় সংস্থা ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর চাপ, হুমকি ও হয়রানির শিকার হতে হয় সাংবাদিকদের নিয়মিতভাবেই। তবে সরকারি মহল সব সময় এ অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।

সূত্র: আরব নিউজ

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আইপিএল: কোন দলে কে থাকলেন, দেখে নিন পূর্ণাঙ্গ তালিকা

পাবলিক রিলেশনস অফিসার পদে নিয়োগ দিচ্ছে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন

দাবি পূরণের আশ্বাস, বিচারকদের আজকের কলমবিরতি কর্মসূচি স্থগিত 

১৬ নভেম্বর : ইতিহাসের এই দিনে যা ঘটেছিল

বিএনপি যা অঙ্গীকার করে তা বাস্তবায়ন করে : খোকন

লিবিয়া উপকূলে ২৬ বাংলাদেশি নিয়ে নৌকাডুবি, মৃত্যু ৪

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

সকালের কিছু ভুল অভ্যাসেই বাড়তে পারে হার্টের ঝুঁকি

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে জরুরি অভিযোগ করছে লেবানন

ইন্দোনেশিয়ার ভয়াবহ ভূমিধসে ১১ জনের মৃত্যু 

১০

রক্তক্ষয়ী হামলার মধ্যেই কাতারে কঙ্গো শান্তি চুক্তি

১১

তারেক রহমানের ৩১ দফাই রাষ্ট্র গঠনে সর্বজনীন দিকনির্দেশনা : মনিরুল হক চৌধুরী

১২

আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনে চাকরির সুযোগ, আজই আবেদন করুন

১৩

ব্র্যাক এনজিওতে চাকরির সুযোগ, সপ্তাহে দুদিন ছুটি

১৪

চাঁদাবাজির সময় ইউপি সদস্যসহ আটক ১০

১৫

১৬ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৬

রোববার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৭

১২০০ টাকার জন্য ব্যবসায়ীকে হত্যা, মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ৩

১৮

জালে আটকা শঙ্খচিল ফিরল আপন ঠিকানায়

১৯

রাজধানীতে কলেজের সামনে বাসে আগুন

২০
X