তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডের পর পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইপ্রধান ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য রাজনীতি থেকে অযোগ্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের এমন পদক্ষেপের কারণে এই পাঁচ বছর তিনি কোনো নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না। তবে এবার নির্বাচন কমিশনের সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে বিচারিক আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেছেন পিটিআইপ্রধান।
গত ৫ আগস্ট ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হুমায়ুন দিলাওয়ার তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরানকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। আদালতের এমন রায়ের পরপর তাকে রাজনীতি থেকে অযোগ্য ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।
এরপর ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (এএইচসি) ইমরানের এই সাজা স্থগিত করলেও বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করেননি। ফলে নির্বাচন কমিশনও ইমরানের বিরুদ্ধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়নি। হাইকোর্ট সাজা স্থগিতের পাশাপাশি ইমরানকে জামিনে মুক্তি দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে সাইফার মামলায় রিমান্ডে থাকায় তিনি কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না।
বৃহস্পতিবার ইমরান খানের আইনজীবীরা বলছেন, গত ২৮ আগস্ট ইসলামাবাদ হাইকোর্ট শুধু পিটিআইপ্রধানের সাজা স্থগিত করেছে, ট্রায়াল কোর্টের আদেশ নয়। এ জন্য তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরানের বিরুদ্ধে ট্রায়াল কোর্টের দেওয়া রায় সম্পূর্ণরূপে স্থগিত করার জন্য আইএইচসির কাছে আবেদন করেছেন পিটিআইপ্রধান।
তোশাখানা দুর্নীতি মামলা
ইমরান খানের বিরুদ্ধে এই তোশাখানা দুর্নীতি মামলা দায়ের করে ইসিপি। মামলার অভিযোগে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তোশাখানা থেকে প্রাপ্ত উপহারের তথ্য ইসিপির কাছে ইচ্ছে করে গোপন করেছেন ইমরান। সাধারণত বিদেশি সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের দেওয়া উপহার তোশাখানায় রাখা হয়। পরে এ মামলায় গত ১০ মে তাকে অভিযুক্ত করা হয়।
তোশাখানা মামলা ছাড়াও বর্তমানে ইমরানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সবচেয়ে আলোচিত মামলা হলো সাইফার বা গোপন তারবার্তা ফাঁসের মামলা। সাইফার মামলা একটি কূটনৈতিক বার্তা সম্পর্কিত, যা ইমরানের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে বলে জানা যায়। পিটিআই অভিযোগ করে বলেছে, হারিয়ে যাওয়া এই বার্তাটিতে যুক্তরাষ্ট্র ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। এই মামলায় পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকেও গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
সরকার থেকে বিদায় নেওয়ার পর থেকে একের পর এক আইনি জটিলতায় পড়ছেন ইমরান খান। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ১৫০টির বেশি মামলা রয়েছে। এমনকি বেশ কয়েকটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
মন্তব্য করুন