ইউক্রেনে ক্লাস্টার যুদ্ধসরঞ্জাম পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মানবিক উদ্বেগ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে এই বোমা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক গণমাধ্যম। অনেকটা গণবিধ্বংসী হওয়ায় ১০০টিরও বেশি দেশ এই অস্ত্রকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ১৫৫ মিলিমিটারের হাউইৎজার কামান থেকে ছোড়া ক্লাস্টার গোলাবারুদসহ অস্ত্রের একটি প্যাকেজ খুব শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।
সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনসহ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী গত সপ্তাহে শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বৈঠকে এসব অস্ত্র পাঠানোর সুপারিশ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে আবিষ্কৃত ক্লাস্টার এমন একধরনের বোমা, যা ছোড়ার পর মাঝ আকাশ থেকে শত শত ছোট ছোট বোমা বেরিয়ে মাটিতে পড়তে থাকে। এগুলো বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সক্ষম। এগুলো মাটিতে পড়ে না ফাটলেও বহুদিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকে এবং পরে ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
ক্লাস্টার বোমার সাহায্যে বৈদ্যুতিক পাওয়ার ট্রান্সমিশন কিংবা যুদ্ধবিমানের রানওয়ে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা যায়। এই বোমার সাহায্যে রাসায়নিক বা জৈবিক অস্ত্র ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। ল্যান্ডমাইন ধ্বংস করতে এই বোমা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পরিকাঠামোর পাশাপাশি ব্যাপক হারে মানুষ হত্যা করা যায় এই বোমার মাধ্যমে।
২০০৮ সালে ইউক্রেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্র যেমন ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যসহ ১২০টিরও বেশি দেশ ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য এ সম্পর্কিত জাতিসংঘের কনভেনশনে স্বাক্ষর করে।
যদিও ইউক্রেন, রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। তবে ২০০৯ সালের একটি আইনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১ শতাংশের বেশি ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র রপ্তানি নিষিদ্ধ করে। সেখানে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বিবেচিত ক্ষেত্রে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা বাতিল করতে পারেন।
এর আগে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) যুদ্ধক্ষেত্রে গুচ্ছ (ক্লাস্টার) অস্ত্র ব্যবহারের জন্য ইউক্রেন ও রাশিয়ার সমালোচনা করেছিল।
মন্তব্য করুন