কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৫, ১০:৫০ পিএম
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৫, ১০:৫১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ট্রাম্পের সঙ্গে বিচ্ছেদ কেন মাস্কের?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক। ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক। ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের মধ্যে একসময়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হঠাৎ করেই ভেঙে পড়েছে। দুজনের প্রকাশ্য বাকযুদ্ধ এবং রাজনৈতিক সংঘর্ষ এই বিচ্ছেদের কারণ হলেও, বিশ্লেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে জেফ্রি এপস্টাইনকে ঘিরে থাকা ‘ফাইল’।

সম্প্রতি এক্স-এ (পূর্বতন টুইটার) মাস্ক লিখেছেন, এবার সত্যিকারের বড় বোমা ফেলার সময় এসেছে। ট্রাম্প জেফ্রি এপস্টাইনের ফাইলগুলোতে আছেন। এটাই আসল কারণ, এগুলো প্রকাশ করা হয়নি।

এরপর তিনি আরও একটি পুরনো ভিডিও প্রকাশ করেন, যেখানে ট্রাম্প ও এপস্টাইনকে একসঙ্গে পার্টিতে দেখা যায়। যদিও এ পর্যন্ত মাস্ক এ বিষয়ে কোনো প্রত্যক্ষ প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।

প্রসঙ্গত, জেফ্রি এপস্টাইন ছিলেন একজন দণ্ডিত যৌন অপরাধী। তার বিরুদ্ধে নাবালিকাদের যৌন নিপীড়ন ও পাচারের অভিযোগ ছিল এবং তিনি বহু রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও তারকাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন। গ্রেপ্তারের পর কারাগারে রহস্যজনকভাবে মারা যান তিনি।

ডানপন্থী মহল দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে- এপস্টাইনকে ঘিরে থাকা গোপন নথি সরকার চেপে যাচ্ছে, কারণ এতে অনেক প্রভাবশালীর নাম রয়েছে। এবার মাস্কের এই মন্তব্য সেই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

মাস্ক ও ট্রাম্পের দ্বন্দ্ব অনেক দিন ধরেই জমছিল। বিশেষ করে ট্রাম্পের ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ নিয়ে মাস্কের প্রকাশ্য সমালোচনার পর সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। ট্রাম্প পাল্টা হুমকি দেন, মাস্কের সরকারি চুক্তি বাতিল করা হবে। এরপর টেসলার শেয়ারমূল্য পড়ে যায়, রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় জল্পনা- এই বিচ্ছেদের পেছনে কি আরও গভীর কিছু আছে?

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, সরকারি বাজেটে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বাঁচানোর সহজ উপায় হলো ইলনের চুক্তিগুলো বাতিল করা। তবে এ কথার উত্তরে মাস্ক যে এপস্টাইনের প্রসঙ্গ টানলেন, তা অনেকের চোখে ‘চূড়ান্ত পাল্টাঘাত’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট পুরো ঘটনাটিকে ‘দুঃখজনক’ বললেও, বিশ্লেষকেরা মনে করছেন এটি প্রযুক্তিকেন্দ্রিক ধনিকশক্তি ও ট্রাম্পের ‘ম্যাগা’ (মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন) আন্দোলনের মধ্যে মতাদর্শিক দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ।

মাস্কের মন্তব্য ট্রাম্পকে রাজনৈতিক ও নৈতিকভাবে চাপে ফেলতে পারে, বিশেষ করে যদি এপস্টাইনের ফাইল নিয়ে তদন্ত বা তথ্য ফাঁসের দাবি জোরালো হয়। এখন প্রশ্ন উঠছে- মাস্ক কি শুধু ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকেই এই অভিযোগ তুলেছেন, নাকি তিনি সত্যিই কিছু ‘অপ্রকাশিত’ তথ্য জানেন?

এদিকে, রিপাবলিকান দলের ভেতরেই এই ইস্যুতে বিভক্তি স্পষ্ট। কেউ মাস্ককে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলছেন, আবার কেউ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করছেন।

বর্তমানে, ট্রাম্পের দল বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার কৌশলে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মাস্ক যদি ভবিষ্যতে এপস্টাইনের বিষয়ে আরও কিছু প্রকাশ করেন, তাহলে এই সম্পর্ক বিচ্ছেদ শুধু দুই ব্যক্তির নয়- যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্যও বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে।

তথ্যসূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আইসিসি থেকে দুঃসংবাদ পেলেন বাবর

কারাবন্দি সাবেক মেয়র আইভী আরও ৫ মামলায় গ্রেপ্তার

মাদুরোর সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী ট্রাম্প, সেনা মোতায়েনেরও সম্ভাবনা

মর্টার শেলের আঘাতে কেঁপে উঠল পুরো এলাকা

ফের ঢাকায় আসছেন আতিফ আসলাম

শিশু ধর্ষণের অভিযোগে ৭৫ বছরের বৃদ্ধ গ্রেপ্তার

আকর্ষণীয় দাড়ি চাইলে প্রয়োজন বাড়তি যত্নের, রইল টিপস

নির্বাচন কবে, জার্মানির রাষ্ট্রদূতকে জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দেশে মোট ভোটারের চূড়ান্ত সংখ্যা প্রকাশ

রাতে বিদেশযাত্রার অনুমতি চাইলেন স্বামী, সকালে না ফেরার দেশে

১০

পুলিশের সামনে ছাত্রলীগের মিছিল, এসআই ক্লোজড

১১

‘সুখবর’ পেলেন বিএনপির আরেক নেতা

১২

পাহাড়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা বাড়ছে, সেনাবাহিনী কেন লক্ষ্যবস্তু?

১৩

‘শেখ হাসিনার ফাঁসি কার্যকর হলে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে’

১৪

‘ছেলের কথা শুনতে পারলে কলিজাটায় শান্তি লাগতো’

১৫

প্রচণ্ড মাথাব্যথা? দূর করবেন যেভাবে

১৬

প্রযোজকের কু-প্রস্তাবের শিকার পায়েল

১৭

যুবদল নেতা কিবরিয়া হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি আমিনুলের

১৮

চবির ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন / বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে চালু ছিল ক্লাস-পরীক্ষা, হয়নি আলাদা আয়োজন 

১৯

আদালতের নিরাপত্তা বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

২০
X