যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান। এসব ঘাঁটিতে হামলার জন্য মিসাইল ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুত করছে দেশটি।
বুধবার ( ১৮ জুন) সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলার জন্য মিসাইল ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুত করছে। এই প্রস্তুতি ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য অংশগ্রহণের প্রেক্ষিতে নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে প্রায় তিন ডজন জ্বালানি সরবরাহকারী বিমান পাঠিয়েছে, যা মার্কিন ঘাঁটি রক্ষাকারী ফাইটার জেট বা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সম্ভাব্য হামলার জন্য বোমারু বিমানের পরিসর বাড়াতে ব্যবহৃত হতে পারে।
মার্কিন কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, ইসরায়েল যদি হোয়াইট হাউসের কাছে সংঘাতে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানায়, তবে বৃহত্তর যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়বে। ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ফোর্ডোতে যুক্তরাষ্ট্র যদি হামলায় অংশ নেয়, তবে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা পুনরায় শুরু করতে পারে। এছাড়া, ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়ারা মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার চেষ্টা করতে পারে।
কিছু কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরান হরমুজ প্রণালিতে মাইন পুঁতে রেখে ফাঁদ পাতাতে শুরু করতে পারে। এটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলোকে পারস্য উপসাগরে আটকে রাখার কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান এবং সৌদি আরবে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ হাজারের বেশি সৈন্য মোতায়েন রয়েছে।
দুই ইরানি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের যুদ্ধে যোগ দেয়, তবে ইরান ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে প্রাথমিকভাবে হামলা চালাবে এবং আরব দেশগুলোর যে কোনো মার্কিন ঘাঁটি যদি হামলায় অংশ নেয়, তাও লক্ষ্যবস্তু হবে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সোমবার বলেন, আমাদের শত্রুদের জানা উচিত যে সামরিক হামলার মাধ্যমে তারা আমাদের ওপর তাদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে পারবে না। তিনি ইউরোপীয় সমকক্ষদের সঙ্গে ফোনালাপে বলেন, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে এর জন্য ইসরায়েল এবং তার প্রধান সমর্থকরা দায়ী থাকবে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরানের বাহরাইন, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মার্কিন ঘাঁটিগুলো সহজেই মিসাইল হামলার পরিসরের মধ্যে রয়েছে। ইসরায়েলের চলমান হামলা এবং ইরানের পাল্টা মিসাইল হামলার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে।
মন্তব্য করুন