ছয় বছর আগে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের মঞ্চে বক্তব্য দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেবার তার বক্তব্যে পরিষদে হাসাহাসি শুরু হয়। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আবারও সেই জাতিসংঘের মঞ্চে ভাষণ দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এবারের পরিবেশ-পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ট্রাম্পের বক্তব্যে যেন আগুন ঝরেছে। সেই তাপে সবাই ছিলেন নীরব, অনেকে মুখে দেখা গেছে চিন্তার ভাঁজ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ছয় বছর আগে ট্রাম্পের দেওয়া তার বক্তব্যে যখন তিনি নানা ভিত্তিহীন দাবি করেছিলেন, তখন শ্রোতারা হাসাহাসি করেছিলেন। কিন্তু এ বছর তারা বেশিরভাগই নীরবে শুনেছেন। হয়তো কেউ ভীতও হয়েছেন।
বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘তোমাদের দেশগুলো ধ্বংসের পথে যাচ্ছে।’ মূলত এটি ছিল বিশ্বের প্রতি তার দর্শনের অন্যতম স্পষ্ট প্রকাশ। তার সমর্থকদের কাছে এটি ছিল ‘ট্রাম্পিজম আনপ্লাগড’; আর সমালোচকদের কাছে এটি ছিল ‘ট্রাম্পিজম আনহিঞ্জড’।
প্রেসিডেন্ট আয়োজকদের দিকে আঙুল তুলেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘ তার শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় কোনো সহায়তাই করেনি। তিনি সংস্থাটির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তার ভাষায়, জাতিসংঘের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু তা কাজে লাগানো হচ্ছে না। প্রায় এক ঘণ্টার এই ভাষণে তিনি তার প্রতিপক্ষ ও তাদের ধারণাকে একে একে আক্রমণ করেছেন। নিজের ঘর থেকে শুরু করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও নিজের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এখন স্বর্ণযুগ চলছে। এসময় তিনি তার সেই বিতর্কিত দাবির আবারও পুনরাবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, তিনি নিজে সাতটি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন। তার মতে এগুলোর জন্যই তিনি শান্তিতে নোবেল পাওয়ার দাবিদার।
ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ইউরোপ গুরুতর সমস্যায় পড়েছে। অবৈধ বিদেশিরা আসছে। তারা এ ব্যাপারে একেবারেই কিছুই করছে না। ইউরোপীয় নেতাদের রাজনৈতিক জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ট্রাম্প।
অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘যদি তাৎক্ষণিকভাবে কিছু না করা হয় তবে পশ্চিম ইউরোপের মৃত্যু হবে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জার্মানি, গ্রিস এবং সুইজারল্যান্ডের নাম উল্লেখ করে ইউরোপীয় দেশগুলোর সমালোচনা করেন।
ট্রাম্পের মতে, বেশ কয়েকটি দেশ সীমান্ত উন্মুক্ত করে পরীক্ষা করছে। যদিও ওই সব দেশের কঠোর অভিবাসন আইন রয়েছে। তিনি বলেন, তোমাদের দেশগুলো নরকে যাচ্ছে। আমরা সীমান্ত অতিক্রমকারী সবাইকে আটক-নির্বাসন শুরু করার পর অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আরও সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছি।
মন্তব্য করুন