বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, বর্তমান বাস্তবতা মেনে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হলো সরবরাহ ও ঘাটতির বিপরীতে প্রয়োজনীয় জোগান ঠিক রাখা। এটা না করলে বাজারে ব্যাপক সংকট তৈরি হতো এবং ঘাটতি বেড়ে যেত। এখন অন্য কোনো পণ্যের দাম কমিয়ে সেটা সমন্বয়ের চিন্তা করছি। তিনি আরও বলেন, ‘আগামী রমজানে খেজুর, ছোলা, তেলসহ অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল থেকে নিম্নগামী থাকবে বলে আশা করছি। আলুর ক্ষেত্রে একটু ব্যর্থতা আছে। তবে আগামী বছর যেন এমন পরিস্থিতি না হয়, সে জন্য বর্তমান থেকে শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি।’ উপদেষ্টা বলেন, তেল বা চিনির বাজারে মুষ্টিমেয় কয়েকজন স্থানীয় আমদানিকারক রয়েছেন। এস আলম গ্রুপের দিকে তিনি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এর মধ্যে সর্ববৃহৎ যে, তিনি কিন্তু দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তার প্রভাব কিন্তু টের পাচ্ছেন না। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টারস ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত ইআরএফ-প্রাণ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ প্রদান অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। এ সময় আরও বক্তব্য দেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ। ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাম মীরধার সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, কার্যনির্বাহী সদস্য, অ্যাওয়ার্ডের বিচারকসহ সাংবাদিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনিয়ম আর লুটপাটে সব সরকারি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে, যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। তিনি বলেছেন, বিগত সরকারের সময়ে এই কার্ড বিতরণ এবং ডিলার নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। শেখ বশিরউদ্দীন জানান, এরই মধ্যে এক কোটি পরিবারের কার্ডের মধ্যে ৫৬ থেকে ৫৭ লাখ কার্ডধারীকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এ ছাড়া পুরোনো কার্ডের পরিবর্তে নতুন স্মার্ট কার্ড করা হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রতিবেশী দেশের কিছু গণমাধ্যম প্রচারণা চালাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ভুল তথ্য শুধু বাইরে থেকে আসছে, তা নয়। দেশের সাংবাদিকরাও অনেক ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এসব ক্ষেত্রে এক ধরনের সরলীকরণ হচ্ছে।
এবার কৃষি অর্থনীতির ওপর প্রতিবেদন তৈরি করে দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন ও টেলিভিশনের সেরা ১০ জন ‘ইআরএফ-প্রাণ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ পান। দৈনিক পত্রিকা শ্রেণিতে যৌথভাবে প্রথম পুরস্কার পান আমাদের সময়ের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জিয়াদুল ইসলাম ও সময়ের আলোর অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক আলমগীর হোসেন। যৌথভাবে দ্বিতীয় হন দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের দুই বিশেষ প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন হারুন ও এফএইচএম হুমায়ূন কবির। তৃতীয় হন কালের কণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন। অনলাইন শ্রেণিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান প্রতিবেদক ইব্রাহীম হুসাইন অভি। দ্বিতীয় হন যুগান্তরের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মিজানুর রহমান চৌধুরী। এ ছাড়া টেলিভিশন ক্যাটাগরিতে প্রথম হন যমুনা টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক তৌহিদ হোসেন পাপন এবং যৌথভাবে দ্বিতীয় হন একুশে টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক তৌহিদুর রহমান এবং ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হরিপদ সাহা।